ভেনিসে বাংলাদেশির জাঁকজমক বিয়ে, ব্যস্ততায় আনন্দ ম্লান

ইতালিতে জীবিকার তাগিদে বসবাস করছেন প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি। ফলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই সামাজিক, রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বাঙালি সংস্কৃতির রীতি অনুযায়ী দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি কত যে এমন আয়োজন দেখেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
চলতি মাসের ৪-৬ তারিখে জলকন্যা খ্যাত ভেনিসের মেস্ত্রে সপরিবারে একটি বিয়ের দাওয়াত ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় কর্মব্যস্ততার কারণে সুন্দর একটি পরিপাটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারিনি। সেজন্য মনে একটু বিষন্নতা অনুভব করেছি। তবে কিছুই যে করার নেই... এটাই প্রবাস। তাছাড়া রোম থেকে ভেনিসের দূরত্ব প্রায় ৫২৫ কিলোমিটার। এটিও না যাওয়ার আরও একটি ঠুনকো কারণ বলা যেতে পারে।
এটি চাঁদপুর জেলার পরিচিত মুখ আমার অগ্রজ প্রিয়জন, ইতালির সামাজিক ব্যক্তিত্ব, একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বর্তমান বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতি, ভেনিসের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসাইনের (এসটি শাহাদাৎ) ছোট ভাই মনির হোসাইনের বিয়ে ছিল। খুব ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলো।

সত্যি প্রবাসে এরকম বাঙালি ঘরানায় বিয়ে খুব কমই দেখা যায়। শুনেছি বিয়েতে উপস্থিতি যেমন ছিল তা দেখে মনে হয়েছে এ যেন ভেনিসের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ।
ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শাহাদাৎ হোসাইন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ... প্রবাসের মাটিতে অনেক সুন্দরভাবে আমার স্নেহের ছোট ভাই মনির হোসাইনের বিয়ের অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হলো। গত ৪ মে ছিল ভেনিসের ঢাকা বিরিয়ানি হাউসে ছিল জমকালো হলুদ সন্ধ্যা। এরপর ৫ মে বিয়ে। ভেনিসের পাশের শহর পাদোভাতে কনেপক্ষের আয়োজনে আমরা ১৮টি প্রাইভেটকারে ৮০ জন অতিথি বরযাত্রী হিসেবে যাই। তৃতীয় দিন ছিল আমাদের আয়োজনে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান। মেস্ত্রে রয়েল পাঞ্জাব রেস্টুরেন্টে জাঁকজমকভাবে বৌ-ভাত সুন্দর ও সফলভাবে সম্পন্ন হলো।
প্রবাসে এমন জীবন অতিবাহিত করতে হয়... এখানে কেউ যেন কারো নয়। ইচ্ছে করলেই সময়ের কারণে একে অপরের পাশে থাকা যায় না।
বাংলাদেশে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে সবাই একত্রিত হওয়ার একটা সুযোগ থাকে। কিন্তু প্রবাসে এটা অসম্ভব। সপ্তাহের প্রতিদিন কেউ না কেউ কাজ করে। তাই একত্রিত হওয়ার মতো কোনো সম্ভাবনা থাকে না। একত্রে মিলিত হতে হলে অবশ্যই মালিকপক্ষের কাছ থেকে ছুটি নিতে হয়। যার কারণে আনন্দটা সহজে ভাগাভাগি করে নেওয়া যায় না। লক্ষ্য করলে দেখা গেছে, বিয়েতে উপস্থিত বেশিরভাগ অতিথি ব্যবসায়ী। যে কারণে প্রবাসে দেশের মতো একটি সুন্দর বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো।
ভেনিস শহর মন জুড়ায়
আমাদের সবার কমবেশি জানা আছে ইতালির অন্যতম পর্যটন নগরী ভেনিস। সেজন্য পর্যটকদের মুখে ভেনিস হলো স্বপ্নের অপরূপ এক শহর। ভাসমান এ শহরটি দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক পর্যটক বেড়াতে আসেন। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে ইতালি সরকারের অন্যতম আরেকটি আয়ের উৎস হলো ভেনিস।
ইতালির উত্তর-পূর্ব ভেনেতো এলাকায় অবস্থিত ভেনিস। এটি একসময় ছিল প্রজাতন্ত্রের রাজধানী এবং ‘প্রশান্ত’ অথবা ‘শাসক’ হিসেবে পরিচিত ছিল জলকন্যাখ্যাত এই ভেনিস। ভেনিসে স্থলভাগের চেয়ে জলভাগের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই ভেনিসের সৌন্দর্য শুধুমাত্র জলপথেই। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি বছর ২০ মিলিয়ন পর্যটক ভ্রমণ করতে আসেন।
কেএ