জর্ডানে শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী পালন

জর্ডানে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দূতাবাস আলোচনা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, কেক কাটা এবং দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করে।
বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা শেখ কামালের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান তার বক্তব্যে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের ফার্স্ট ওয়ার কোর্স সম্পন্ন করা তরুণদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ওয়ার কোর্স সম্পন্ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে পুনরায় লেখাপড়া শুরু করেন। স্বাধীনতা উত্তর পরিস্থিতিতে তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠা করেন। এই ক্লাবের অধীনে তিনি ফুটবল ছাড়াও হকি, ক্রিকেট এবং টেবিল টেনিস দল গঠন করেন।
শেখ কামালের উদ্যোগেই ক্রীড়াক্ষেত্রে পেশাদারিত্বের সূচনা ঘটে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ক্রীড়া ও রাজনৈতিক গণ্ডির বাইরে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেও তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল প্রতিভা। তিনি নিজে অভিনয় করতেন এবং গান গাইতেন ও সেতার বাজাতেন।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ঘাতকের বুলেট আমাদের স্বাধীনতার প্রজন্মের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের জীবন প্রদীপ স্তব্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু তার আলোকশিখা ম্লান করতে পারেনি। তাই আজকের প্রজন্মের মাঝেও আমরা শেখ কামালের অনুসরণীয় আদর্শকে দেখতে পাই।
তিনি বলেন, শেখ কামাল প্রতিটি প্রজন্মের তরুণদের জন্যই এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

উপস্থিত বক্তারা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শেখ কামালের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ৬ দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১১ দফা এবং অসহযোগ আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। একজন শিক্ষিত নীতিবান, রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়, সংস্কৃতিবান তরুণ হিসেবে শেখ কামাল ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শ সন্তান এবং বাংলাদেশের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। বক্তারা শেখ কামালের নীতি ও আদর্শকে বর্তমান প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে শেখ কামালের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া কেক কেটে শেখ কামালের জন্মদিন উদযাপন করা হয় এবং উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশি খাবার দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়। সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও শেখ কামালসহ ঘাতকের হাতে নিহত তার পরিবারের সকল সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এইচকে