পর্তুগালে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ল, বড়দিন ঘিরে কঠোর বিধি-নিষেধ

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় নাকাল হয়ে পড়েছে ইউরোপের দেশগুলো। এরইমধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় আসন্ন বড়দিন ও নতুন বছর উদযাপনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের প্রায় সবগুলো দেশেই লকডাউন জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও ইতালিতে লকডাউনের পাশাপাশি জরুরি অবস্থাও জারি করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে চলমান লকডাউন আরও বর্ধিত করেছে পর্তুগাল। করোনা মহামারির কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়া ঠেকাতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিনসহ নতুন বছর উদযাপনের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার। এর আগে গত ১৫ অক্টোবর পর্তুগালে জরুরি অবস্থা জারি করে পরে তা বিভিন্ন মেয়াদে কয়েকবার বর্ধিত করা হয়। সর্বশেষ ঘোষণায় চলমান জরুরি অবস্থার মেয়াদ আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন করে বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। তবে এই সময়ের পরে পরিস্থিতি পুনর্বিবেচনা করে সন্তোষজনক মনে না হলে জরুরি অবস্থা আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আবারও বর্ধিত করা হতে পারে।
এদিকে জরুরি অবস্থার পাশাপাশি বড়দিন ও নতুন বছর উদযাপনকে সামনে রেখে করোনা ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ সমৃদ্ধ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষে দেশটির সরকারের দেয়া বিধি-নিষেধে বলা হয়েছে, জনসমাগম হয় এমন সব স্থানে আগামী ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর মানুষকে কেবল রাতের বেলায় বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আগামী ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর রাত ২টা পর্যন্ত এবং ২৬ ডিসেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে ঘরের বাইরে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর দেশটির রেস্টুরেন্টগুলো রাত একটা পর্যন্ত এবং পরদিন ২৬ ডিসেম্বর অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর রেস্টুরেন্টগুলোকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এছাড়া নতুন বছর উদযাপনের বিষয়ে আরোপিত বিধি-নিষেধে আগামী ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ৪ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত এক পৌর এলাকা থেকে অন্য পৌর এলাকায় যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে স্থানীয়ভাবে সন্ধ্যা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত পাবলিক প্লেস ও রাস্তায় চলাচল করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে নতুন বছরের প্রথম দিনে এই অনুমতির সময়সীমা সন্ধ্যা থেকে ১১টা পর্যন্ত। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর রাত ১টা পর্যন্ত এরং পরদিন ১ জানুয়ারি অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ পৌর এলাকাগুলোতে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত রেস্টুরেন্ট খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে প্রকাশ্যে বা খোলা জায়গায় যেকোন ধরনের পার্টি বা উৎসব সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। পাশাপশি রাস্তায় একসাথে ৬ জনের বেশি মানুষ জড়ো হওয়ার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সংক্রমণপ্রবণ পৌর এলাকাগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্যান্য দিনের জন্য পূর্বে আরোপিত সকল ধরনের বিধিনিষেধ বজায় থাকবে।
এদিকে আসন্ন বড়দিন ও নতুন বছর উদযাপনের প্রাক্কালে জনসমাগম এড়িয়ে চলা, দীর্ঘক্ষণ মাস্কব্যতীত থাকা, ছোট জায়গা, বদ্ধ বা অপ্রতুল বাতাস চলাচলযুক্ত স্থান এড়িয়ে চলতে দেশটির সকল মানুষকে পরামর্শ দিয়েছেন পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি করোনা মহামারি শুরুর প্রথমদিকে পর্তুগালের জনগণ যেভাবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছিল এবারও ঠিক তেমনভাবে সকলকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এনএফ