নাট্যচক্রের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

দেশের স্বনামধন্য নাট্য সংগঠন নাট্যচক্রের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) পালিত হয়েছে। গত দুবছর করোনা মহামারির কারণে জাঁকজমক আর ঘটা করে পালন করা হচ্ছে না প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কোনো অনুষ্ঠান।
১৯৭২ সালের ১০ আগস্ট একদল তরুণ, নবীন, উদ্যম ও প্রতিভাবানদের নিয়ে নাট্যচক্র প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ‘নাট্যচক্র’ বাংলাদেশের অন্যতম প্রথম নাট্যদল যা এ দেশের নাট্যকর্মীদের জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে।
সংগঠনের জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
নাট্যচক্রের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনের সভাপতি, বিটিভি ও এফডিসি সাবেক মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাবেক চেয়ারম্যান নাট্যজন ম. হামিদ বলেন, ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নাট্যচক্রের বর্তমান ও অতীতের সকল সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন। অতীতের মতো আগামীর পথচলায় সহযাত্রীরা সকলেই সঙ্গে থাকবেন এটাই প্রত্যাশা। নাট্যচক্রের জয় হোক। নাটকের জয় হোক।
এছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভ দিনে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষের মঙ্গল কামনা করেন।
নাট্যচক্রের ৪৯তম জন্মদিনে সংগঠনটির সহ-সভাপতি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সাবেক পরিচালক ও চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও বিশিষ্ট নাট্যজন ফাল্গুনী হামিদ বলেন, শুভ জন্মদিনে দলের এবং সারা বিশ্বের সকল নাট্যকর্মীদের প্রতি আমার অভিনন্দন। নতুন নতুন কাজ নিয়ে আমরা আবার মঞ্চে একত্রিত হতে পারব এমনটাই আমার প্রত্যাশা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে আমরা সবাই একটি উদ্বিগ্নতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। বৈশ্বিক দুর্যোগ কাটিয়ে করোনামুক্ত হয়ে সবাই ভালো থাকুক, এমনটাই আমার প্রত্যাশা।
বিশিষ্ট নাট্যজন ও নাট্য নির্দেশক দেবপ্রসাদ দেবনাথ বলেন, দীর্ঘ পথ পেরিয়ে নাট্যচক্র পঞ্চাশ বছরে পদার্পণ করেছে এমন এক সময় যখন আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীটা মহামারির ছোবলে বিপন্ন। এই সংকটকালে অনন্তলোকে হারিয়ে গেছেন বেশ ক’জন গুণী সংস্কৃতিসেবীসহ অনেক প্রিয় মুখ। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি। এই অমানিশা কেটে যাবে একদিন। ব্যতিক্রমী সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে মসৃণ হয়ে উঠুক ভবিষ্যৎ। সহযাত্রী ও দর্শক শুভানুধ্যায়ীদের জন্য শুভকামনা।
নাট্যজন ও বিশিষ্ট অভিনেতা সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, দলের সকল সংগঠক, অভিনয় শিল্পী, নেপথ্য কলাকুশলী এবং সদস্যদের অফুরন্ত শুভেচ্ছা ভালবাসা ও অভিনন্দন। জয় হোক থিয়েটারের, জয় হোক মানবতার।
নাট্যজন ও বিশিষ্ট নাট্য নির্দেশক গোলাম সারোয়ার বলেন, আমরা সত্যিই এক কঠিন সময় অতিক্রম করছি। শুভ এই দিনে সকলের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করছি।
নাট্যজন মোখলেছুর রহমান টুলু বলেন, করোনা মহামারির এই সময়ে আমরা সবাই এক শঙ্কার মধ্যে দিন যাপন করছি। গত দু’বছরে আমরা অনেক গুণী নাট্যজনকে হারিয়েছি। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। সুদিনের অপেক্ষায় আমরা দিন গুনছি। সবাইকে নাট্যচক্রের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা।
উল্লেখ্য নাট্যচক্র সত্তর দশক থেকে আজ অবধি তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে। নাট্যচক্রের উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- একা এক নারী, এক্সপ্লোসিভ ও মূল সমস্যা, জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন, সংবাদ শেষাংশ, নবান্ন, প্রত্যাবর্তনের দেশে, স্পার্টাকাস, রাজা অনুস্বরের পালা, চক সার্কেল, দোররা, প্রতীক্ষার প্রহর, লেট দেয়ার বি লাইট, জনক, হোজা নাসিরুদ্দিন, চানমিয়ার বাইস্কোপ এবং সর্বাধিক প্রদর্শিত ও প্রশংসিত জনপ্রিয় নাটক ভদ্দরনোক।
নাট্যচক্র ১৯৭৭ সালে ‘নাট্য শিক্ষাঙ্গন’ নামে এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্সের প্রথম উদ্যোগ নেয়। এই কোর্সের অধ্যক্ষ ছিলেন অধ্যাপক কবীর চৌধুরী।
ওএফ