মালয়েশিয়ায় অতি বৃষ্টিপাতে বন্যা, সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

মালয়েশিয়ায় প্রবল বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূল, মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল এলাকায় বন্যা সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর।
মালয়েশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। কিছু কিছু জায়গায় সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে সড়কে থাকা কিছু গাড়ি। রাজধানী কুয়ালালামপুর ও এর আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনগণের স্বাভাবিক চলাফেরা ব্যাহত হচ্ছে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ার আবহাওয়া বিভাগ সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূল, মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চলের জন্য বন্যা সতর্কতা জারি করেছে।

শুক্রবার সকাল থেকে অবিরাম ভারি বর্ষণের ফলে সেলাঙ্গরের শাহ আলম ও ক্লাংয়ের বেশ কিছু আবাসন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাত ৯টার দিকে শাহ আলম এলাকায় বন্যার পানি বাড়তে শুরু করে। তামান শ্রী মুদা, কোটা কেমুনিং এমনকি কেসাস হাইওয়েতে ক্লাংয়ের দিকে বেশ কয়েকটি বাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সবশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, আবাসিক এলাকায় পানির উচ্চতা হাঁটুর ওপরে ছিল।
আল ইসলাহ মসজিদ, আল-উবুদিয়া মসজিদ, এসকে তেলোক গং, এসকে জোহান সেটিয়া, বালাই এমপিকেকে এসজি পিনাং, এসএমকে পুলাউ ইন্দাহ, এসআরএ পুলাউ ইন্দাহ, বালাই এমপিকেকে পেরিগি নানাস, বালাই এমপিকেকে বুকিত নাগা, এসকে এসজি বিজাই, এসআরএ পাদাং জাওয়া ক্লাং, এসকে জালান কেবুন, এমপিকেকে কমিউনিটি হল কেজি লোম্বং, এসআরএ এসজি সেরডাং, দেওয়ান পিপলস হল, এসআরএ পেকান কাপার, এসআরএ কেজি ডেলেক, কেজি ডেলেক এমপিকেকে হলো প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে, টানা বৃষ্টির কারণে মালয়েশিয়ার নেগ্রি সেম্বিলান রাজ্যের ২৯টি এলাকার মোট ২৭৪ ভুক্তভোগীকে পাঁচটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। স্থানীয় ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিসেস বিভাগের সহকারী পরিচালক (অপারেশন) আহমেদ মুখলিস মোখতার বলেন, শুক্রবার রাত ১০টা থেকে টানা বৃষ্টির কারণে বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ায় ১১২ জন বাসিন্দাকে স্থানীয় লুকুটের কেজি পায়া কমিউনিটি হলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এছাড়া শনিবার সিলিয়াউ হিলিরের একটি সুরাউতে ৮৭ জন, কেরু হিলিরের অন্য একটি সুরাউতে ৪২ জন ও তেলুক কেমাং-এর কেজি পারমাটাং পাসির কমিউনিটি হলে ২৯ জনকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের সাহায্য করতে জরুরি ভিত্তিতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ক্লাং এমপি চার্লস সান্তিয়াগো।
একটি ফেসবুক পোস্টে আলোর গাজা পুলিশ বলেছে, অবিরাম বৃষ্টির কারণে শহরের কাছাকাছি একটি নদী প্লাবিত হয়েছে।
সরকারি সংবাদ সংস্থা বার্নামা জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার আবহাওয়া পরিষেবা বিভাগ কেলান্তান এবং পাহাং-এ অবিরাম ভারী বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া অধিদফতর সতর্কতা জারি করেছে। কেলান্তানের গুয়া মুসাং অঞ্চলটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাহাং, ক্যামেরন হাইল্যান্ডস, লিপিস, জেরান্টুট, মারান ও কুয়ানতানেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

কেদাহ, পেনাং, কেলান্তান, তেরেঙ্গানু, পাহাং, সেলাঙ্গর, কুয়ালালামপুর, পুত্রাজায়া, নেগেরি সেম্বিলান ও মেলাকার জন্য একটি বৃষ্টি ঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বার্নামা আরও রিপোর্ট করেছে, আশপাশের এলাকায় গুদাম ও কন্টেইনার ডিপোতে পোর্ট ক্ল্যাং কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম বিরূপভাবে প্রভাবিত হয়েছে এবং অ্যাক্সেস রাস্তার ক্ষতির কারণে আরও খারাপ হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ টার্মিনাল অপারেটর, ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট, হোলিয়ার কোম্পানি এবং পণ্য ক্লিয়ারিংয়ের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার জন্য এবং পণ্যগুলো নির্ধারিত গন্তব্যে সময়মতো পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে।
ওএফ