শীতকালকে যে কারণে মুমিনের বসন্তকাল বলেছেন নবীজি
ঋতু বৈচিত্রের দেশ বাংলাদেশ। ছয় ঋতু ঘুরে ফিরে আন্দোলিত করে সবাইকে। প্রতিটি ঋতু অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে আগমন করে অনাবিল সৌন্দর্য উপহার দেয়। ঋতু পরিক্রমায় প্রতি বছরই এ দেশের মানুষের দুয়ারে হাজির হয় শীতকাল। শীতকালে সময় ও আবহাওয়ায় বিশাল পরিবর্তন দেখা দেয়। এসময় রাত বড় হয়, দিন ছোট হয়। এসবই আল্লাহ তায়ালার অপার নিদর্শনের অংশ।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই রাত-দিনের পরিবর্তনে এবং আসমান ও জমিনে আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, তাতে খোদাভীরুদের (মুত্তাকিদের) জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সুরা ইউনুস, আয়াত : ৬)
পৃথিবীর সূচনা থেকেই আল্লাহ তায়ালা এমন ঋতু বৈচিত্র দিয়ে রেখেছেন। নবীজি সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেও ছিল ঋতুর বিভিন্ন রূপ, কখনও গ্রীষ্ম কখনও শীত। শীতকালের এই পরিবর্তন মুমিনের জন্য রহমত হয়ে আসে।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শীতকালকে মুমিনের বসন্তকাল বলেছেন। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘শীতকাল হচ্ছে মুমিনের বসন্তকাল।’ -(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১১৬৫৬)
এসময় রাত অনেক দীর্ঘ ও দিন একেবারে ছোট হয়ে যাওয়ায় চাইলেই রাত্রিকালীন নফল ইবাদত, তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারেন যেকেউ। আবার দিন ছোট হওয়ায় প্রত্যেক সপ্তাহ ও মাসে যেই নফল রোজাগুলো রাখার কথা রয়েছে তা সহজেই পালন করা সম্ভব।
এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে— ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ (বায়হাকি, হাদিস : ৩৯৪০)
প্রখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলতেন, ‘শীতকালকে স্বাগতম। কেননা তা বরকত বয়ে আনে। রাতগুলো দীর্ঘ হয়। ফলে তা ‘কিয়ামুল লাইল’র জন্য (রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ) সহায়ক এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে সহজ।’ (আল-মাকাসিদুল হাসানা, হাদিস : ২৫০)
ইবনে রজব হাম্বলি (রহ.) বলেন— শীতকাল মুমিনদের বসন্ত। কারণ, এ সময়ে মুমিন আল্লাহর আনুগত্যের বাগানগুলোতে আনন্দ-উল্লসিত হয়। ইবাদত-বন্দেগির চারণভূমিতে বিচরণ করে। সহজ-ছোট আমলগুলোর কানন-বীথিতে পরিভ্রমণ করে। (লাতায়িফুল মাআরিফ ফিমা লিল মাওয়াসিমি মিনাল ওজায়িফ, পৃষ্ঠা : ৩২৬)
এনটি