কোরআনের অনুলিপি লিখতে চাইলে যেসব মানতে হবে

কোরআনের অনুলিপি তৈরির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করা আবশ্যক।
নিয়ত শুদ্ধ করা
কোরআন আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। সুতরাং যে ব্যক্তি কোরআনের অনুলিপি তৈরি করবে সে কেবল ইবাদতের নিয়তে তা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সব কাজের প্রতিদান নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ -(সহিহ বুখারি, হাদিস : ১)
পবিত্রতা রক্ষা করা
অনুলিপি তৈরির সময় ব্যক্তির দেহ পবিত্র হবে এবং সে কেবল পবিত্র উপকরণই ব্যবহার করবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কেবল পবিত্র ব্যক্তিরাই তা (কোরআন) স্পর্শ করবে।’-(সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত : ৭৯)
সম্মান রক্ষা করা
পৃথিবীতে আল্লাহর সবচেয়ে বড় নিদর্শন হলো পবিত্র কোরআন। তাই তার সম্মান রক্ষা করা আবশ্যক। অনুলিপি তৈরির সময় ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করবে না যাতে কোরআনের অসম্মান হয়। যেমন নিজে ওপরে বসে কোরআনের অনুলিপি নিচে রাখা। আল্লাহ বলেন, ‘কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলিকে সম্মান করলে তা তো তার অন্তরের তাকওয়ারই অন্তর্ভুক্ত।’ -(সুরা হজ, আয়াত : ৩২)
লেখার সৌন্দর্য রক্ষা করা
ফকিহ আলেমরা বলেন, কোরআনের অনুলিপি তৈরির সময় হাতের লেখা সুন্দর হওয়া এবং লেখার সৌন্দর্য রক্ষা করা মুস্তাহাব। যেমন অক্ষর স্পষ্ট হওয়া, উভয় লাইনের মধ্যে ফাঁকা থাকা ইত্যাদি। অন্যদিকে কারো হাতের লেখা এত অস্পষ্ট হয় যে, মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে, তবে তার জন্য অনুলিপি তৈরি না করাই উত্তম। (আল-ইতকান ফি উলুমিল কোরআন, পৃষ্ঠা ৭৪৩)
অপচয় রোধ করা
কোরআনের অনুলিপি তৈরির ক্ষেত্রে অপচয় ও বাহুল্য পরিহার করা আবশ্যক। যেমন স্বর্ণের কালি দিয়ে লেখা, স্বর্ণ-রৌপ্য দ্বারা কারুকাজ করা ইত্যাদি। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আবু জর, আবু দারদা (রহ.)-সহ একদল সাহাবির ব্যাপারে বর্ণিত, তাঁরা স্বর্ণের কালি দিয়ে কোরআন লেখা অপছন্দ করতেন। (মুসহাব অধ্যায়, আল-মাউসুআতুল ফিকহিয়্যা : ৩৮/১৪)
মিলিয়ে দেখা
কোরআনের অনুলিপি তৈরি শেষ হলে তা গ্রহণযোগ্য কোনো মুসহাফের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা দক্ষ হাফেজে কোরআনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা আবশ্যক। যেন ভুল হলে তা সংশোধন করা যায়। -(আল-মুজামুল কাবির : ৫/১৪২)