ইমামের কিরাতে লোকমা হলে কি সাহু সিজদা দিতে হবে?

নামাজে কোরআনে কারিম তেলাওয়াত করা ফরজ, আর সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মিলিয়ে পড়া ওয়াজিব। এক্ষেত্রে পবিত্র কোরআনের যেকোনো স্থান থেকে তেলাওয়াত করলে নামাজের ফরজ আদায় হয়ে যাবে।
ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে এবং নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতে কেরাত পড়া ফরজ। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মধ্যে জোহর ও আসরের সব রাকাত এবং বাকি তিন ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে কিংবা শেষ রাকাতে এবং সব ধরনের ওয়াজিব, নফল ও মুস্তাহাব নামাজের প্রতি রাকাতে কিরাত নিচু স্বরে পড়তে হয়।
নামাজের কিরাতে কোথাও ইমামের সন্দেহ হলে এবং সামনে অগ্রসর হতে না পারলে মুকতাদীর তাকে সহযোগিতা করা উত্তম। সহযোগিতার পদ্ধতি এই যে—
মুকতাদী উচ্চস্বরে শুদ্ধভাবে পাঠ করবেন। এটাকে পরিভাষায় ‘লোকমা দেওয়া’ বলে। অনেক সময় কিরাত ছাড়াও উঠা-বসার ক্ষেত্রে কোথাও ইমামের ভুল হলে তাকে সতর্ক করাকেও লোকমা দেওয়া বলে। এই লোকমা দেওয়া ও নেওয়ার আদব ও বিধান রয়েছে। যেগুলো জানা ও মেনে চলা অপরিহার্য।
সাহু সিজদার বিষয়টি নামাযের কোনো ওয়াজিবে ভুল করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিরাতের লোকমার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
কিরাতের যেসব ভুলের কারণে নামাজ ভেঙ্গে যায় এমন কোনো ভুল যদি কারো নামাজে হয় তাহলে সাহু সিজদার দ্বারা নামাজ শুদ্ধ হবে না; পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবে।
পক্ষান্তরে কিরাতে যদি কোনো সাধারণ ভুল হয় কিংবা বড় ভুল হলেও লোকমা দেওয়ার পর ইমাম তা শুধরে নেন তাহলে নামাজের ক্ষতি হবে না। এক্ষেত্রে নামাজও পুনরায় পড়তে হবে না, সাহু সিজদাও ওয়াজিব হবে না।
আরও পড়ুন
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের কেরাত
পাঁচ ওয়াক্তের ফরজ নামাজে কোরআন তেলাওয়াতে নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করা সুন্নত-
১. সফর অবস্থায় সুরা ফাতেহার পর যেকোনো সুরা মিলিয়ে নিলেই চলবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধ্যকতা নেই।
২. ফজর ও জোহরের নামাজে সুরা হুজুরাত থেকে সুরা বুরুজ পর্যন্ত সুরাগুলো থেকে পড়া।
৩. আসর ও এশার নামাজে সুরা তারিক থেকে সুরা বায়্যিনাহ পর্যন্ত সুরাগুলো থেকে পড়া।
৪. মাগরিবের নামাজে সুরা জিলজাল থেকে সুরা নাস পর্যন্ত সুরাগুলো থেকে পড়া।