পাকিস্তানের ঘাম ঝরিয়ে হারল নেদারল্যান্ডস

আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের অবস্থান ৪-এ। আর নেদারল্যান্ডস আছে বাবর আজমদের থেকে দশ ধাপ পিছিয়ে। সেই পুঁচকে ডাচদের কাছেই কি-না হারতে বসেছিল পাকিস্তান! তিন ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে মাত্র ২০৬ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল দলটি! সেই লক্ষ্য প্রায় তাড়া করেই ফেলেছিল ডাচরা। তবে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতার কাছে শেষমেশ মার খেয়ে গেছে স্বাগতিকরা। শেষমেশ ম্যাচটা হেরেছে মাত্র ৯ রানে।
আগের দুই ম্যাচে জিতে সিরিজ অবশ্য নিশ্চিত করে ফেলেছে সফরকারীরা। তবে ওয়ানডে সুপার লিগের খেলায় যে ‘ডেড রাবার’ বলে কিছু নেই! সে কারণে শেষ ম্যাচেও প্রায় পুরো শক্তির দল নিয়েই মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। কেবল ইমাম উল হকের জায়গায় অভিষেক হয়েছিল আব্দুল্লাহ শফিকের।
শুরুতে ব্যাট করা পাকিস্তানের হয়ে একাই লড়েছেন বাবর আজম। ওদিকে সঙ্গীদের আসা যাওয়ার ভিড়ে তিনি করেছেন ৯১ রান। সেটাই হয়ে ছিল পাকিস্তানের ইনিংসের মেরুদণ্ড। বাকি সব ব্যাটসম্যান মিলে যে করেছিলেন মোটে ১১৫ রান, ৩০ এর ওপরে যায়নি কারো ব্যক্তিগত ইনিংসই!
পাকিস্তানের ব্যাটিং ব্যর্থতার শুরুটা হয়েছিল অভিষিক্ত আব্দুল্লাহ শফিককে দিয়ে। অভিষেকটা তিনি রাঙাতে পারেননি মোটেও। দলীয় ৩ রানে বিদায় নেন তিনি। এরপর প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ফখর জামান আর আগা সালমান থিতু হয়ে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে ফেরেন।
এরপরের গল্পটা কেবলই বাবরের। ডাচ বোলারদের তোপ সামলে একপাশ আগলে রাখেন তিনি। তবে ওপাশে দেখেছেন সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিল। মাঝে মোহাম্মদ নওয়াজের সঙ্গ পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু এরপর তিনি নিজেই বিদায় নেন সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৯ রান দূরে থাকতে। তবে এর আগে টানা তিন ইনিংসের ফিফটি তিনি করে ফেলেন অবলীলায়।
এরপর নওয়াজের ব্যাটিংয়ে রানটা ২০০'র কাছাকাছি পৌঁছায় পাকিস্তানের। তিনি দলকে ১৯১ রানে রেখে বিদায় নিলেও লেজের ব্যাটসম্যানদের সহায়তায় রানটা ২০০ পেরোয় সফরকারীদের। ৫০তম ওভারের চতুর্থ বলে অলআউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে ২০৬ রান তোলে দলটি। ফলে এই অল্প পুঁজি নিয়েই ডাচদের কাছে হার এড়ানোর লড়াইয়ে নামতে হয় পাক বোলারদের।
জবাবে ডাচদের ইনিংসের শুরুটাও ভালো হয়নি। ১০ রানে প্রথম উইকেট খোয়ায় স্বাগতিকরা। এরপর ৩৭ রান তুলতে হাওয়া আরও এক জোড়া উইকেট। এরপর বিক্রমজিৎ সিং আর টম কুপার হাল ধরেন দলের। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ৭১ রান। তাতে রান তাড়ার কক্ষপথে ফেরে ডাচরা, আর পাকিস্তানের দুশ্চিন্তা যায় বেড়ে।
ইনিংসের ৩১তম ওভারে ওপেনার বিক্রমজিৎকে বিদায় করে সে দুশ্চিন্তা কিছুটা কমান মোহাম্মদ ওয়াসিম। এরপরের ব্যাটসম্যান স্কট অ্যাডওয়ার্ডসও বিদায় নেন অল্পেতেই। ১১৬ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে বসে স্বাগতিকরা। এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে কুপার তেজা নিদামানুরুকে সঙ্গে নিয়ে যোগ করেন ৫৬ রান। তাতে জয়ের আশাটা আবারও জেগে ওঠে ডাচ শিবিরে। তবে শেষরক্ষা হয়নি দলটির। দুই রানের ব্যবধানে দুই জনকে হারিয়ে বিপদে যে পড়ল ডাচরা, শেষ পর্যন্ত আর উদ্ধার হতেই পারল না দলটি। শেষ দিকে লোগান ফন বিক, আরিয়ান দত্তরা চেষ্টা করেছেন বটে, তবে তা দলটিকে জেতাতে পারেনি আর। শেষ ওভারে অল আউট হয় ১৯৭ রানে। তাতেই দলটির সঙ্গী হয় ৯ রানের আক্ষেপ। আর বাবর আজমের দল জেতে ৩-০ ব্যবধানে।
এনইউ