ঘুরেফিরে সেই হারের বৃত্তেই বাংলাদেশ

সংক্ষিপ্ত স্কোর-
নিউজিল্যান্ড: ১৭৩/৫, ১৭.৫ ওভার (ফিলিপস ৫৮*, মিচেল ৩৪*, গাপটিল ২১; মেহেদি ২/৪৫, সাইফ ১/৩৫)
বাংলাদেশ: ১৪২/৭, ১৭ ওভার (সৌম্য ৫১, নাইম ৩৮, মাহমুদউল্লাহ ২১; সাউদি ২/২১, ব্যানেট ২/৩১, মিলনে ২/৩৪)
ফল: বৃষ্টি আইনে নিউজিল্যান্ড ২৮ রানে জয়ী।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে হয়তো নিউজিল্যান্ডে প্রথম জয়ের স্বাদটা পাওয়া হতো বাংলাদেশ দলের। যেখানে বৃষ্টি আইনে শুরুতে টাইগারদের সামনে ৯৬ বলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪৮ রানের। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেদের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনেন আইসিসির ম্যাচ অফিশিয়ালরা। জানানো হয় বাংলাদেশ দলের জয়ের জন্য করতে হবে ১৭০ রান। নতুন এই টার্গেট টপকাতে নেমে ১৬ ওভার শেষে ১৪২ রানে থামে বাংলাদেশ দলের ইনিংস। ফলে ২৮ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে কিউইরা।
বাইশ গজে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে যদি-কিন্তু বলে কিছু নেই। ফলাফল পক্ষে আনতে গেলে মিলাতে হবে হিসেব। সে হিসেব মেলাতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এতে অবশ্য কিছুটা দায় এড়ানোর সুযোগ আছে সফরকারীদের। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ দাবি করতেই পারেন, ১৪৮ রানের লক্ষ্য মাথায় গেঁথে নিয়েছিল তার দল। ৯ বল পর নতুন লক্ষ্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি তারা।
এর আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টানা ৩০ ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয় বঞ্চিত লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। জয় খরা কাটানোর সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হার বাঁচানোর লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার মাঠে নেমছিল টাইগাররা। তবে নেপিয়ারের এ ম্যাচেও ব্যর্থ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়া মাঠে নামা বাংলাদেশ দল।
ছুটি নেওয়ায় নিউজিল্যান্ড সফরে যাননি সাকিব। ওয়ানডে সিরিজ খেলতে দেশে ফিরে এসেছেন তামিম। চোটের কারণে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামা হচ্ছে না আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের। নিউজিল্যান্ড সফরে একেবারেই ছন্দে নেই মুস্তাফিজ। তাকে বিশ্রাম দিয়েছে দল।
মূল দলের চার ক্রিকেটার ছাড়া খেলতে নেমে সফরে প্রথমবারের মতো টস ভাগ্য কথা বলে বাংলাদেশের হয়ে। টস জিতে প্রতিপক্ষকে আগে ব্যাট করতে আমন্ত্রণ জানান মাহমুদউল্লাহ। স্বাগতিকদের হয়ে ইনিংস শুরু করতে নেমে ব্যাট হাতে টাইগার বোলারদের শাসন করেন দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও মার্টিন গাপটিল। উদ্বোধনি জুটিতে ৪ ওভারে ৩৬ রান যোগ করেন দুজন। ১৭ রানে থাকা অ্যালেনকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। পরে অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে গাপটিলকে ২১ রানের বেশি করতে দেননি তিনি।
নেপিয়ারে আজ অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি ডেভন কনওয়ে (১৫) ও উইল ইয়ং (১৪)। কনওয়ে আউট হয়েছেন শরিফুলের বলে, ইয়ংকে ফেরান শেখ মেহেদী হাসান। পরে গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটতে থাকে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টি শুরুর হলে ১৭ ওভার ৫ বলে ১৭৩ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস। যেখানে ফিলিপস ৩১ বলে ৫৮ ও মিচেল ১৬ বলে ৩৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।
গোটা সফরের মতো বাজে বোলিং আর মিস ফিল্ডিংয়ের মহড়া দেখা গেছে এ ম্যাচেও। আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও হাত গলিয়ে বের হয়ে গেছে একাধিক ক্যাচ। গ্রাউন্ডস ফিল্ডিংও যাচ্ছেতাই।
পরে বৃষ্টি থামলে বাংলাদেশের দলের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৭০ রানের। সে লক্ষ্য টপকাতে নেমে শুরুতেই ফিরে যান ওপেনার লিটন দাস। মাত্র ৬ রান করে ব্যানেটের বলে কাটা পড়েন তিনি। একপ্রান্ত আগলে রাখলেও ধীরগতির ব্যাটিং করেন নাইম শেখ। তাতে সৌম্য সরকারের ঝড়ো ফিফটি একেবারেই কাজে আসলো না। মাত্র ২৫ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে চলতি সফরে প্রথম অর্ধশতকের স্বাদ পান সৌম্য। পরে ৫১ রানে নিজের দায়িত্ব শেষ করেন তিনি।
সৌম্যর আউটের পর ৩৮ রান করে ফিরে যান নাইম। তবে বল খরচ করেন ৩৫টি। নাইমের আউটের পর মাহমুদউল্লাহ ২১ রান ছাড়া আর কেউই উল্লেখ করার মতো স্কোর করতে পারেননি। ফলে আশা জাগিয়েও জয় বঞ্চিত থাকতে হয় বাংলাদেশকে। ১৬ ওভার শেষে ১৪২ রানে থামে টাইগারদের ইনিংস। বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি আগামী ১ এপ্রিল। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায়।
টিআইএস/এটি