দাপুটে জয়ে দুঃস্বপ্ন ভুলল ভারত

সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ১৯৫ ও ২০০ (গ্রিন ৪৫; সিরাজ ৩৭-৩, জাদেজা ২৮-২, বুমরাহ ৫৪-২)
ভারত: ৩২৬ ও ৭০-২ (শুবমান ৩৫, রাহানে ২৮; স্টার্ক ২০-১)
ফল: ভারত ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: অজিঙ্কা রাহানে
আগের টেস্টেই ৩৬ রানে অলআউটসহ নাকাল হয়ে হার। তার ওপর ছিল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করে কখনো না জেতার রেকর্ড। ছিলেন না ভারতের ব্যাটিং-বোলিংয়ের প্রধান দুই অস্ত্র বিরাট কোহলি ও মোহাম্মদ শামিও। সব মিলিয়ে সিরিজে ফেরাটা কঠিনই ছিল ভারতের। তবে সব রক্তচক্ষুকে যেন এক তুড়িতে তাসমান সাগরে ভাসাল অজিঙ্কা রাহানের দল! বোর্ডার গাভাস্কার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে ফিরিয়েছে ১-১ সমতা।
আগের দিন ইনিংস ব্যবধানে জয়টা ফসকে গিয়েছিলো। অজিরা লিড নিয়েছিল দুই রানের। অতিমানবীয় কিছু না হলে চতুর্থ দিনে হারটা অবশ্যম্ভাবী ছিলো অস্ট্রেলিয়ার। আজ সকালে তেমন কিছু হয়নি আদৌ, শেষ চার উইকেটে স্বাগতিকরা আর যোগ করতে পেরেছে মোটে ৬৭ রান।
ইশান্ত শর্মা, রবিচন্দন অশ্বিনরা আগের দিনের মতো এদিনও চেপে ধরে রেখেছিলেন অজিদের। তাতে অস্ট্রেলিয়ার ওভারপ্রতি রান ২ এর ঘর পেরোয়নি কখনোই। বিরুদ্ধ স্রোতেও একটা চেষ্টা চালিয়েছিলেন ক্যামেরন গ্রিন। তবে মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হয়ে তার চেষ্টাও শেষ হয়েছে অজিদের ইনিংস-সর্বোচ্চ ৪৫ রানে। ১৭ রানে দিন শুরু করা প্যাট কামিন্স এদিন ফিরেছেন ২২ রানে, বুমরাহর শিকার বনে। এরপরই আসে গ্রিনের পালা। নাথান লায়ন আর জশ হেইজেলউডকে বশে আনতে ভারতকে তেমন কোনো সমস্যাই হয়নি, সিরাজ আর অশ্বিনের শিকার হয়ে দুজনে যখন ফিরেছেন, অজিদের ইনিংস ততক্ষণে শেষ হয় ২০০ রানে। আর তাতে ভারতের সামনে লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ৭০-এর।
অজি ব্যাটসম্যানরাও দুই ইনিংসেই ছিলেন যাচ্ছেতাই। অর্ধশতক ছুঁতে পারেননি কেউ। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এমন কিছু শেষবার হয়েছে সেই ১৯৮৮ সালে। সেবার ম্যালকম মার্শাল, কার্টলি অ্যামব্রোস, কোর্টনি ওয়ালশদের তোপে অ্যালান বোর্ডারের অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যান ছুঁতে পারেননি অর্ধশতকের মাইলফলক। এমন পারফর্ম্যান্সের পর পরাজয়টা অবশ্যম্ভাবী ছিলো অস্ট্রেলিয়ার। হয়েছেও সেটাই।
মামুলি লক্ষ্যকে সামনে রেখে শুবমান গিল শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। উইকেটের অন্য প্রান্তে অবশ্য মায়াঙ্ক আগারওয়াল মিচেল স্টার্কের শিকার বনেছেন দলীয় ১৬ রানে। এর পাঁচ বল পর চেতেশ্বর পুজারাও যখন সিরিজে তৃতীয় বারের মতো প্যাট কামিন্সের ‘বানি’ বনলেন, শঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ভারতীয় শিবিরে।
এরপর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রাহানে আর শুবমান মিলে পরিস্থিতি সামলে সফরকারীদেরকে নিয়ে গেছেন ঐতিহাসিক এক জয়ের বন্দরে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করে জেতে ভারত।
এনইউ