উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের দল থেকে যেভাবে বাদ পড়েছিলেন শামি

ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ শেষে ভারতের সবচেয়ে আলোচিত ক্রিকেটারদের একজন পেসার মোহাম্মদ শামি। ২৪ উইকেট নিয়ে তিনি বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল বোলার হয়েছেন। যার জন্য তিনি খেলেছেন মাত্র ৭টি ম্যাচ। সে কারণে জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ ও রবীন্দ্র জাদেজাদের ছাপিয়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন শামি। সম্প্রতি নিজের শখ এবং অতীতে বড় একটি সময় পার করা অজানা অধ্যায়ের কথা সামনে এনেছেন এই ৩৩ বছর বয়সী পেসার। ভারত জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার আগে শামির বাস, ট্রাক এমনকি ট্রাক্টর চালানোরও অভিজ্ঞতা রয়েছে।
শামির বেড়ে ওঠা ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে। এরপর জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার আগে বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির হয়ে খেলেন ন্যাশনাল লেভেলে। পুমার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে শামি বলেন, ‘আমি ভ্রমণ এবং মাছ ধরতে পছন্দ করি। ড্রাইভিং আরও বেশি পছন্দের। তবে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার গড়তে আমি বাইক ড্রাইভিং ছেড়ে দিই। কারণ একটাই— যদি আমি ইনজুরিতে পড়ি! তবে গ্রামে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় বাইক চালানো হয়।’
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে একমাত্র ৫০ উইকেট পাওয়া শামি বলেন, ‘আমি মাটি থেকে এসেছি, যা হতে পারে ক্ষেতের আগাছা। আমি ট্রাক্টর, বাস ও ট্রাক চালিয়েছি। আমার এক স্কুল ফ্রেন্ডের বাড়িতে ট্রাক ছিল, সে একবার আমাকে সেটি চালাতে বলেছিল। তখন ছোট ছিলাম, তবুও পরে মাঠে চালিয়ে দেখিয়েছি। এছাড়া আরেকবার ট্রাক্টর চালাতে গিয়ে নদীতে নামিয়ে দিয়েছিলাম, সে কারণে অনেক বকুনি খেতে হয়েছিল বাবার কাছে।’
— CricketNDTV (@CricketNDTV) November 25, 2023
একই সাক্ষাৎকারে উত্তর প্রদেশের হয়ে দল নির্বাচনে তার সুযোগ পাওয়ার বর্ণনাও দেন এই ভারতীয় পেসার। যার জন্য শামির ভাই রাজ্যের প্রধান নির্বাচকের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত না হলেও সেসব কথা শুনে হতবাক হয়েছিলেন নির্বাচকরা। শামি বলেন, ‘আমার ভাইকে বলা হয়েছিল– ‘‘যদি আমার চেয়ারটা নাড়াতে পারো, তোমার ভাই সিলেক্টেড, নইলে আমি দুঃখিত।’’ তখন জবাবে ভাই বলেছিল– ‘‘চেয়ার নাড়ানোর কথা ভুলে যান, আমি পুরো চেয়ারই উল্টে দিতে পারব। আমার সেই সামর্থ্য আছে।’’ কিন্তু আমি সেরকমটা চাইনি, বিশ্বাস ছিল আমার যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই এক সময় ডাক পাব। এরপর ভাইয়া সেই পরীক্ষার ফর্মটা ছিড়ে ফেলেন এবং বলে দেন যে আজকের পর থেকে উত্তর প্রদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। সেই দিনটিই আমার রাজ্যের ক্রিকেটে শেষ দিন ছিল।’
আরও পড়ুন
‘এরপর আমি কলকাতায় চলে আসি, তখন আমার বয়স ১৪-১৫ বছরের মতো। সেখানকার কোচের সঙ্গে কথা বললাম এবং আমি খেলার বিষয়ে অবিচল ছিলাম। এরপর আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। ৩-৪ বছর পর আমি অরুণ লাল একাডেমিতে যাই। সেখানে ছিল সিমেন্টের পিচ এবং রানআপের জন্য যথেষ্ট জায়গাও ছিল না। আমি তো দেখে হতবাক। তবুও বল করার চেষ্টা করলাম। এরপর তারা আমাকে দুপুরে ছোলার তরকারি খেতে দিল, সেটিও আমার জন্য ছিল আশ্চর্য হওয়ার ঘটনা। আমি ভাবলাম হয়তো আমাকে ডালভাতও দেবে’, যোগ করেন শামি।
ভারতীয় এই পেসার আরও বলেন, ‘এরপর কিছুটা অভিজ্ঞ হওয়ার পর একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে খেলার প্রস্তাব পাই। কিন্তু তারা বিনিময়ে টাকা দেবে না। ফলে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলাম এরপরও, এক সময় ক্লাব কর্তৃপক্ষ আমাকে ২৫ হাজার রুপি করে দিতে থাকে।’
এএইচএস