ফিফাকেও জানাতে চায় কিংস
এশিয়ার ক্লাব ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর এএফসি কাপ। সেই এএফসি কাপে বাংলাদেশি ক্লাবগুলো নানা ভোগান্তি ও প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এবার এএফসি কাপের গ্রুপ থেকে বিদায় নেওয়ার অন্যতম কারণ গত ম্যাচের বিতর্কিত রেফারিং।
এবারের এএফসি কাপের সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনকে অবহিত করার কথা জানিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান, ‘দল ফিরে আসলে পুরো আসর পর্যালোচনা করে আমরা এএফসিকে চিঠি দেব। প্রতি ম্যাচের সময় আমরা তাদের বিভিন্ন বিষয় অবহিত করে রাখি। এবার সামগ্রিক বিষয় নিয়ে দেয়া হবে।’
এএফসি কাপের ফেসবুক পেজে কিংস-উড়িষা ম্যাচের ফুটেজ নেই। আবার ইউটিউবে নেই লাল কার্ডের বিষয়টিও। ফলে এএফসি’র নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে অন্য সবার মতো বিস্মিত হয়েছেন কিংস সভাপতিও, ‘এএফসির হাইলাইটসে এটি না থাকাটা আসলে সত্যিই বিস্ময়কর।’
এএফসিকে অনেক বিষয়ে চিঠি লেখেও প্রতিকার হয় না। তাই কিংস সভাপতি এএফসিকে দেওয়া চিঠি ফিফাকেও অবহিত করতে চান, ‘ফিফার দৃষ্টি আকর্ষণ নিয়েও আমরা ভাবছি। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ফুটবলে ঘটনাপ্রবাহ ফিফাকে অবগত করা প্রয়োজন।’
গত কয়েক বছরে জাতীয় দল ও ক্লাবে এশিয়ান ফুটবল পর্যায়ে নানা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনে দক্ষিণ এশিয়ার কোটায় নির্বাহী কমিটিতে বাংলাদেশের একজন ফুটবল কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের বিচ্যুতি নিয়ে কতটুকু ঝড় তোলেন সেই প্রশ্নও এখন উঠছে ফুটবলাঙ্গনে।
গতকালকের ম্যাচের প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে কিংসের ফুটবলার গফুরভ পেছন থেকে ওড়িষার ফুটবলারকে ট্যাকল করেন। ভিয়েতনামের রেফারি সাধারণ এই ট্যাকলেই সরাসরি লাল কার্ড দেখান। ফুটবলাঙ্গনে রেফারির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। আবার এর বিপরীতেও বলছেন অনেকে, পেছন থেকে ট্যাকলে রেফারি লাল কার্ড দেখাতেই পারেন। তবে দীর্ঘদিন এএফসির এলিট প্যানেলে থাকা বাংলাদেশের শীর্ষ রেফারি তৈয়ব হাসানের ব্যক্তিগত মতামত, ‘আমার পর্যবেক্ষণে এটি লাল কার্ড এড়ানোর মতো ছিল।’ তৈয়বের মতোই মত আরও অনেক রেফারির।
আরও পড়ুন
রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ম্যাচে প্রভাব পড়েছে। তবে কিংস গতকাল খুব ভালো ফুটবলও খেলতে পারেনি। তাই প্রশ্ন উঠেছে ঘরোয়া ফুটবলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে এমন পরিণতির শিকার। ঘরোয়া ফুটবলে কিংস অনেকটাই একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করে। ঘরোয়া ফুটবলে কিংসের অপ্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ক্লাবটির সভাপতির মন্তব্য, ‘আরও কয়েকটি ক্লাব ভালো মানের দল গড়লে অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মান আরও বাড়বে। অন্য ক্লাবগুলোরও ভালো দল গড়া প্রয়োজন।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রেফারির অনেক সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিপক্ষেই যায়। এগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘরোয়া ফুটবলে এড়িয়ে যান রেফারিরা। আবার কিছু ক্ষেত্রে বড় ক্লাবগুলো বাড়তি সুবিধা পায়। গুঞ্জনও আছে— প্রিমিয়ার লিগে টানা চারবারের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসও রয়েছে এর আওতায়। তবে কিংসের সভাপতি এটা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখান করলেন, ‘এমন অনেক ম্যাচ এবং ঘটনা রয়েছে সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গিয়েছে। কয়েকটি লিগ ও টুর্নামেন্টের পর্যালোচনায় দেখা যাবে পেনাল্টি কম পাওয়া দলের ক্ষেত্রে আমরাই হয়তো এগিয়ে আছি।’
এজেড/এএইচএস