‘ভারতীয় দলে সাহসী ক্রিকেটার অভাব আছে’
এই তো কয়েকদিন আগেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য স্কোয়াড ঘোষণায় হিমশিম খেতে হয়েছিল ভারতকে। কাকে বাদ দিয়ে কাকে দলে রাখবে, এ চিন্তায় বেশ ঘাম ঝরেছে অজিত আগারকার নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেলের। এরপর ঘোষিত স্কোয়াডে বাদ পড়েছেন অনেক চেনামুখ, যা নিয়ে সমালোচনার অন্ত নেই। অথচ এই দলেই কিনা সাহসী ক্রিকেটারের অভাব দেখছেন সাবেক ভারতীয় তারকা ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ।
বর্তমানে এই ক্রিকেট বিশ্লেষক অবশ্য এমন দাবি করেছেন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেও, ভারতের শিরোপা জেতা হয়নি। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে সর্বশেষ ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল তারা। এরপর তাদের সান্ত্বনা কেবলই এশিয়া কাপ ট্রফি। সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচ জিতেও শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার কাছে শিরোপা খোয়াতে হয়েছে। আর এর কারণ হিসেবে শেবাগ দলটির ড্রেসিংরুমে সাহসী ও নির্ভীক ক্রিকেটারের অভাব দেখছেন।
সাবেক এই মারকুটে ওপেনার বলেন, ‘যদি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের দিকে তাকাই, তবে ১১তম থেকে ৪০তম ওভারের মধ্যে ভারতের কেউ নির্ভীক ক্রিকেট খেলেনি। আমরা কেবল একটি বা দু’টি চার মেরেছিলাম।’ ওই মন্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে পক্ষে–বিপক্ষে নানা যুক্তি দেখিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেটভক্তরা।
— (@ArrestPandya) May 8, 2024
এরপর শেবাগ নিজের ক্যারিয়ারের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘আমি আমার উদাহরণ দিতে পারি। আমি যখন জাতীয় দলে ছিলাম, ২০০৭-০৮ থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ (ওয়ানডে) পর্যন্ত, তখন আমরা প্রতিটি ম্যাচকে নকআউট ম্যাচ হিসেবে দেখতাম। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল হিসেবে বিবেচনা করতাম। যদি আমরা হারি ছিটকে যাব— এই মানসিকতা নিয়ে খেলতাম। তাই ২০০৭-০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত, আমরা অনেক টুর্নামেন্ট জিতেছি এবং বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হয়েছি। আমরা এখন নেই, তাই মানসিকতাও বদলে গেছে।’
বর্তমানেও এমন মানসিকতা থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেন শেবাগ, ‘আমি মনে করি যে এই মানসিকতা ভারতীয় ড্রেসিংরুমে দরকার। যখন নকআউট ম্যাচ খেলতে যাবে, তখন তারা নির্ভয়ে, সাহসিকতার সঙ্গে এবং কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই খেলবে। আমার মনে হয়, বর্তমানে এই নির্ভীকতার অভাব ভারতীয় ড্রেসিংরুমে রয়েছে।’
আরও পড়ুন
২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক রোহিত শর্মা শুরুটা ভালো করেছিলেন। তবে ৩১ বলে ৪৭ করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে আউট হয়ে যান তিনি। এর পরেই ভারতের রানের গতি কমতে থাকে। যেটা আর সম্ভাব্য কক্ষপথে ফেরেনি। শেষ পর্যন্ত ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। বিরাট কোহলি ৬৩ বলে ৫৪ রান করেছিলেন। ১০৭ বলে ৬৬ করেছিলেন লোকেশ রাহুল। দ্রুত উইকেট হারানো দলের হাল ধরতে গিয়ে কেউই সেভাবে বাউন্ডারি খেলতে পারেননি। এ বিষয়টিকেই তাদের ফাইনাল হারের জন্য বড় কারণ হিসেবে দেখছেন শেবাগ।
পরবর্তীতে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সহজেই জয় ছিনিয়ে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় বোলাররাও ২৪০ রান ডিফেন্ড করতে পারেননি। ওপেনার ট্রাভিস হেডই একা দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচটি জিতিয়ে দেন। ১২০ বলে ১৩৭ রান করে যখন হেড আউট হন, ততক্ষণে অজিদের জয়ের পথ তৈরি হয়ে গেছে। প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া ছয় উইকেটে জিতে রেকর্ড ষষ্ঠ বিশ্বকাপের দখল নেয়।
এএইচএস