কেমন স্বাস্থ্যবিধি মেনে হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ?

লকডাউন ও বিধিনিষেধের মধ্যে চলছেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ। ক্রীড়াঙ্গনের ও ক্রীড়াপ্রেমীদের অনেকেরই আগ্রহ করোনা মহামারির এই পরিস্থিতির মধ্যে কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে এই টুর্নামেন্ট?
গ্যালারি একদম দর্শক শূন্য। মিডিয়াতে দর্শকশূন্য খেলা হবে প্রচার হওয়ার পরেও ঢাকা আবাহনী, মোহামেডানের অনেক সমর্থক স্টেডিয়ামে এসেছিলেন। ভিভিআইপি এক নম্বর ও মিডিয়া গেটই খোলা শুধুমাত্র। সমর্থকরা দুই গেট দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন গতকাল ও আজ দুই দিনই।
সাংবাদিকদেরও প্রবেশের সময় স্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা মেপেই প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন। ডিউটিরত পুলিশ অফিসারদের করোনা রিপোর্ট নিয়ে ফেডারেশনের কাছে তথ্য না থাকলেও তারা ফুটবলারদের মোটামুটি দূরত্বেই অবস্থান করেন। বলবয়, গেটম্যানদেরও করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। ক্লাব বা দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকে ভিআইপি এনক্লোজারে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন শুধুমাত্র করোনা রিপোর্ট এবং অ্যাক্রিডিটিয়েশন কার্ড থাকা শর্তে। অনেক ক্লাবের কর্মকর্তা ও ক্রীড়াঙ্গনের সুপরিচিত মুখ খেলা দেখতে এসে ফেরত গেছেন এই নিয়মের কারণে।
প্রতিটি দলকেই করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। ফুটবল ফেডারেশনের সহযোগিতায় ১৩ ক্লাবের মধ্যে ১০ ক্লাব করোনা পরীক্ষা করিয়েছে। বাকি তিন ক্লাব নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। তবে গতকাল ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও শেখ রাসেল ম্যাচ নিয়ে খানিকটা গুঞ্জন ও প্রশ্ন উঠেছে।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন খেলতে চায়নি গতকালের ম্যাচটি। বুধবার রাতে বাফুফের মেডিক্যাল কমিটি ব্রাদার্স ক্লাব লোক পাঠিয়েছিল ব্রাদার্সের করোনা নমুনা সংগ্রহ করতে। তেমন সংখ্যক ফুটবলার না থাকায় এবং খেলা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকায় ওই দিন রাতে আর পরীক্ষার নমুনা নেওয়া হয়নি।
শুক্রবার শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত হয় ম্যাচ খেলার। ওই দিনও করোনা পরীক্ষা করানো হয়নি। ফলে করোনা রিপোর্ট ছাড়াই কি লিগ খেলল ব্রাদার্স? ফুটবল ফেডারেশনের বক্তব্য নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়েই খেলেছে তারা। তবে ব্রাদার্সের ম্যানজোর আমের খান বিষয়টি আরও খোলাসা করেছেন, ‘আমরা যাদের খেলিয়েছি তাদের নেগেটিভ রিপোর্ট ছিল। ফুটবল ফেডারেশনের নিয়ম হচ্ছে ২১ দিন পর পর টেস্ট। আমরা সর্বশেষ টেস্ট করিয়েছি ২১ দিন আগে। সেই রিপোর্ট দিয়েই আমরা কাল খেলিয়েছি।’
৯ এপ্রিল দ্বিতীয় লেগ শুরু হওয়ার কথা। ১৪ এপ্রিল ক্যাম্প বন্ধ করেছে ব্রাদার্স। ১৪ এপ্রিলের আগে সর্বশেষ পরীক্ষা করা হয়েছে বলে দাবি আমেরের, ‘আমরা ১৪ এপ্রিলের পর ক্যাম্প বন্ধ করেছি। এর দুই এক দিন আগে আমরা পরীক্ষা করিয়েছি। সেই ফলাফলের মেয়াদে আমরা এই ম্যাচ খেলেছি।’
ব্রাদার্স দ্বিতীয় লেগে ১২ জন ফুটবলার নিয়েছে। নতুন ফুটবলাররা তো আর আগের ক্যাম্পে ছিলেন না। এই প্রসঙ্গে ব্রাদার্স ম্যানেজার বলেন, ‘ওই নতুন খেলোয়াড়রা নিজেরাই পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে কাল ক্লাবে এসেছিল। এমিলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। তার রিপোর্ট না থাকায় খেলতে পারেনি কিন্তু তার দুই ডোজ নেওয়া হয়েছে। আমরা আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটায়নি।’
সন্ধ্যা সাতটার ম্যাচ শেষ হতে হতে প্রায় নয়টা বেজে যায়। আবার নয়টায় আরেকটি ম্যাচ থাকে। ওই সময় চার দলের ফুটবলার কর্মকর্তা, কোচিং স্টাফ কয়েক মিনিটের জন্য জড়ো হয়ে যান। দুই ম্যাচের মধ্যে সময় স্বল্পতার জন্য তখন স্বাস্থ্যবিধির ব্যত্যয় ঘটে। তবে বিকেল চারটার প্রথম ম্যাচের পর এবং সন্ধ্যা সাতটার দ্বিতীয় ম্যাচের আগে অবশ্য তেমনটা হয় না।
এজেড/এটি/এমএইচ