ক্যাচ মিসের যৌথ মহড়া ভারত-ইংল্যান্ডের, নেপথ্যে যে কারণ!

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে হেডিংলিতে খেলছে ভারত ও ইংল্যান্ড। শুভমান-পান্তদের দেওয়া ৩৭১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় স্বাগতিকরা পঞ্চম দিনে ব্যাট করছে। উভয় দলের ব্যাটিং দাপটের পাশাপাশি আলোচিত হচ্ছে ক্যাচ মিসের যৌথ মহড়া। উভয় দল কমপক্ষে ৭–৮টি ক্যাচ হাতছাড়া করেছে চলমান এই ম্যাচে। এর নেপথ্য কারণ হিসেবে কয়েকটি মজার বিষয় তুলে এনেছেন অ্যালিস্টার কুক, স্টুয়ার্ট ব্রড ও জাসপ্রিত বুমরাহ।
হেডিংলিতে এত ক্যাচ হাতছাড়া করা নিয়ে সমালোচিত হচ্ছে উভয় দল। দুই ইনিংস মিলিয়ে কেবল যশস্বী জয়সওয়ালই ছেড়েছেন ৪টি ক্যাচ। এ ছাড়া রবীন্দ্র জাদেজা, হ্যারি ব্রুক ও ঋষাভ পান্তদের হাত থেকেও ক্যাচ ফসকে গেছে। দুই দলেরই এমন বাজে ফিল্ডিংয়ের দৃষ্টিকটু দৃশ্য কী স্বাভাবিক ভুল নাকি এর পেছনে কোনো কারণ আছে সেটাই আলোচনা হয়েছে ধারাভাষ্যকারদের মাঝে। সাবেক দুই ইংলিশ তারকা কুক ও ব্রড যেমন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বুমরাহ–ও হেডিংলি মাঠে নিজেদের চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছেন।
বিবিসির ‘টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল’ অনুষ্ঠানে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক কুক বলেন, ‘কেবল স্লিপ কর্ডনেই পাঁচটি ক্যাচ হাতছাড়া হয়েছে। আমার মতে এক্ষেত্রে দুটি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, এই মাঠ কিছুটা ঢালু কি না আমি নিশ্চিত নই। সম্ভবত এর সঙ্গে খেলোয়াড়রা অভ্যস্ত নয়। আর স্কয়ার লেগের দিকটা বেশ দীর্ঘ, ফলে সেদিকে ক্যাচ উঠলে দৌড়ে গিয়ে তা তালুবন্দি করার ক্ষেত্রে সেটি ভূমিকা রাখে।’
— Test Match Special (@bbctms) June 23, 2025
ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক টেস্ট ভেন্যু হিসেবে লর্ডস সবার কাছে পরিচিত। আর হেডিংলিতে রাগবি মাঠের কিছুটা প্রভাব আছে বিধায় ভারতীয় ফিল্ডারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন তারকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ। তিনি বলেন, ‘ভারতে আমরা বেশিরভাগ সাধারণ, সমান মাঠে খেলে থাকি, যা ঢালু নয়। কিছু অংশ উঁচু, আবার কিছু নিচু মিলিয়ে এই মাঠটা জটিল মনে হয় মাঝেমধ্যে। উঁচু জায়গা থেকে আরও খাড়া অংশে যাওয়ার পর, তখন আপনি স্বভাবতই পেছনের দিকে সরে যেতে থাকবেন।’
ক্যাচ মিসের আরেক ব্যাখ্যায় কুক বলেন, ‘আমার মনে হয় মাঠের ধরনটাও এর বড় কারণ। যখন আপনি গ্যালারি স্ট্যান্ডের দিকে তাকাবেন কালো লেন দেখতে পাবেন, যা আসলেই ঘন কালো। যদি বল ওপরে ওঠে তখন সম্ভবত এটা খেলোয়াড়দের ওপর প্রভাব ফেলে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ধরতে গিয়ে কিছুটা প্যানিক হয়ে পড়ে তারা। ক্যাচ ধরার জন্য আপনাকে স্থির থাকতে হয়, হাত শক্ত এবং শরীর স্বাভাবিক। যদি আপনার মনে হয় “বল কোথায় চলে গেল?” তখনই প্যানিকটা চলে আসে। স্টেডিয়ামের কালো স্তরটি নিয়ে আমি একজনের সঙ্গেও কথা বলেছি, যার জন্য আসলেই খেলোয়াড়রা সংগ্রাম করছে।’
আরও পড়ুন
মাঠের ধরনটা ফিল্ডারদের জন্য ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে কঠিন করে তুলছে বলে মনে করেন সাবেক ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডও, ‘হেডিংলি মাঠটা চোখের দৃষ্টিতে কিছুটা কঠিন। স্ট্যান্ড বরাবর বল উঠলে আপনি সেটি হারিয়ে ফেলতে পারেন। যখন অল্প মেঘও আকাশে জমা হয়, তখন অন্ধকার ভাবটা আরও বাড়ে। ফলে ০.১ সেকেন্ডেই বল হারিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতে পারেন। সত্যিকার অর্থে এই মাঠে ক্যাচ ধরাটা তাই কঠিন।’
‘আবার দর্শকও আপনাকে বিভ্রান্ত করতে পারে, ঠাণ্ডা বেশি হলে তারা বিভিন্ন রংয়ের গরম পোশাক পরে আসেন। আবার গ্যালারির কিছু অংশ খালি থাকায় দর্শকের দিকে মুখ করে থাকা ফিল্ডারের চোখে বল ভিন্নভাবে আসে। মেঘ থাকলে মাঠের কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটি আরও কঠিন হয়ে পড়ে ফিল্ডারদের জন্য’, আরও যোগ করেন ব্রড।
এএইচএস