হাইড্রেশন ব্রেক: স্বাস্থ্য নাকি ব্যবসা, কাকে অগ্রাধিকার দিতে চাইছে ফিফা?

আগামী বছরের বিশ্বকাপে আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে বেশ গরম পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন নিয়ম চালু করছে ফিফা। বিশ্বকাপের প্রত্যেক ম্যাচ হবে চার অর্ধে। হাফটাইমের পাশাপাশি প্রথম দুই ৪৫ মিনিটের মধ্যেও থাকবে ছোট্ট বিরতি, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘হাইড্রেশন ব্রেক’।
কোচ ও ব্রডকাস্টারদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফিফা বলছে, এই বছর ক্লাব বিশ্বকাপেও এই ধরনের বিরতি দেওয়া হয়েছিল। তবে সেটা তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে। কিন্তু বিশ্বকাপে আবহাওয়া যেমনই থাকুক না কেন, প্রত্যেক ম্যাচে প্রতি অর্ধে ২২ মিনিট পর খেলা বন্ধ করে দেবেন রেফারি। মানে প্রতি ম্যাচ হবে চার অর্ধে! দুই অর্ধে থাকবে তিন মিনিটের বিরতি।
ক্লাব বিশ্বকাপে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে বেনফিকা ফরোয়ার্ড আন্দ্রেস শেলডারাপ বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় না, এত গরমের মধ্যে কখনো খেলেছি। আমার মনে হয় না, এটা স্বাস্থ্যকর। সত্যি কথা। কিন্তু আমি খেলা শেষ করতে পারলাম।’ চেলসির এনজো ফের্নান্দেজ বলেছিলেন, ‘একদিন তো আমার মাথা ঝিমঝিম করছিল, শুয়ে পড়েছিলাম। এত তাপের মধ্যে খেলা খুব বিপজ্জনক।’
খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিফা। কিন্তু তাদের এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নিয়মটা কি সত্যিই ফুটবলারদের স্বার্থে চালু হতে যাচ্ছে নাকি বিরতির আড়ালে বিজ্ঞাপন বেচার ব্যবসা করতে চলেছে ফিফা?
কারণ হাইড্রেশন ব্রেক মানেই ম্যাচে বাড়তি বিরতি। খেলোয়াড়রা পানি পান করলেও মাঝে চলবে বিজ্ঞাপন। কারও মতে, খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি সম্প্রচারের মধ্যে আরও কমার্শিয়াল ঢুকানোর লক্ষ্য ফিফার। তাছাড়া ফুটবলাররা ম্যাচ চলাকালে অল্প চুমুকে পানি খান। তিন মিনিটের বিরতি সেখানে কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন থাকছে। খেলোয়াড়দের জন্য এই বিরতি ফুটবলারদের জন্য কতটা প্রয়োজন, তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। আর এত বিরতির কারণে খেলায় ছন্দপতন হওয়ার শঙ্কাও থাকছে।
ফিফা যতই দাবি করুক যে এই বিরতি খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার জন্য, অনেক সমর্থকদের মতে এটা নতুন বিজ্ঞাপন উইন্ডো খোলার ফন্দি। এত অল্প সময়ের বিরতিতে শেষ পর্যন্ত খেলোয়াড়রা লাভবান হবেন নাকি ফিফা, সেই প্রশ্নের উত্তর অজানাই থেকে যাবে!
এফএইচএম/