‘ক্রিকেটের চেয়ে বেশি কাউকে ভালোবাসি না’, বিয়ে বাতিলের পর স্মৃতি

সপ্তাহ দুয়েক ভারতীয় ক্রিকেটে অন্যতম আলোচিত খবর ছিল স্মৃতি মান্ধানার সঙ্গে সুরকার পলাশ মুচ্ছলের বিয়ে স্থগিতের বিষয়টি। শেষ পর্যন্ত নানা জল্পনা শেষে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেটার স্মৃতি সেই বিয়ে বাতিলের ঘোষণা দেন। এখনও সেই আলোচনার রেশ রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরই মাঝে এই তারকা ব্যাটার সকল সমস্যা বাইরে রেখে ক্রিকেট নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন।
ভারতীয় জার্সি গায়ে ১২ বছর ধরে খেলছেন স্মৃতি। তবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবটা পেলেন চলতি বছরেই ভারতে অনুষ্ঠিত নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে। এরপরই দীর্ঘদিনের প্রেমিক পলাশের সঙ্গে বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছিলেন স্মৃতি। সব ঠিকঠাকই ছিল, গায়ে হলুদসহ আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে কেবল বিয়ের রীতি-নীতি বাকি। তখনই হঠাৎ বিয়ে স্থগিত হওয়ার কারণ হিসেবে প্রথমে স্মৃতির বাবার অসুস্থতার কথা উঠে আসে। পরে শোনা যায়, পলাশও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এরই মাঝে গুঞ্জন ওঠে– পলাশ নাকি সম্পর্কে প্রতারণা করেছেন।
পরবর্তীতে সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে স্মৃতি বিয়ে বাতিলের কথা উল্লেখ করে জানান, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমার জীবনকে ঘিরে অনেক জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি এখন আমার পক্ষে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। আমি খুব ব্যক্তিগত জীবনযাপন করি এবং সেটি বজায় রাখতে চাই। তবে স্পষ্ট করে জানাতে চাই- বিয়ে বাতিল করা হয়েছে। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, দয়া করে এই মুহূর্তে উভয় পরিবারের গোপনীয়তাকে সম্মান করুন এবং আমাদের নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিন।’

পলাশও ক্ষোভ প্রকাশ করে জীবন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। বিয়ে বাতিলের পরও দুজনকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ শেষ হয়নি। তবে ক্রিকেটেকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা এবং তাতে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার কথা বলছেন স্মৃতি, ‘আমার মনে হয় না ক্রিকেটের মতো কোনো কিছুকে এত বেশি ভালোবাসি। ভারতীয় জার্সি গায়ে জড়ানো আমাদের কাছে প্রেরণার মতো। যা আপনার সকল সমস্যাকে বাইরে রাখে এবং জীবনের দিকেই মনোযোগী হতে সাহায্য করে।’
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরুর পর অসংখ্য রেকর্ড নিজের দখলে নিয়েছেন ভারতীয় এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। ছোট বেলা থেকেই নাকি ক্রিকেটের প্রতি এই ভালো লাগা শুরু হয় তার। অ্যামাজনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্মৃতি মান্ধানা বলেন, ‘শিশু বয়সে ব্যাটিং করার জন্য সবসময় পাগলামি ছিল। কেউ বুঝতে পারত না, তবে সেটি আমার মনেই ছিল। আমি সবসময়ই চেয়েছি– আমাকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বলে ডাকা হোক।’
অনেক সংগ্রামের পর ভারতীয় নারী দল বিশ্বকাপ ট্রফি জিতেছে বলে দাবি এই তারকার, ‘বছরের পর বছর আমাদের লড়াইয়ের পুরস্কার এই বিশ্বকাপ। যা পেতে আমরা খুব করে চেয়েছি। আমি ১২ বছরের বেশি সময় খেলছি– যার মধ্যে অনেক সময় নিজেদের চাওয়া মতো ছিল না। ফাইনালের আগে আমরা আগের দৃশ্যপট কল্পনা করেছি, স্ক্রিনে যখন সেসব দেখলাম সেটি আমাদের উজ্জীবিত করে। এটি অবিশ্বাস্য ও সবচেয়ে বিশেষ মুহূর্ত।
বিশ্বকাপ জয়ের পর মিতালি রাজ ও ঝুলন গোস্বামীদের মতো কিংবদন্তিদের উপস্থিতি আরও আবেগতাড়িত করেছে ভারতীয় সহ-অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানাকে, ‘আমরা তাদের জন্য এটি জিততে চেয়েছিলাম। তাদের চোখে অশ্রু দেখে অনুভূতি বলছিল– নারী ক্রিকেটই জিতে গেছে। তাদের সবার জন্য এমন জয় এসেছে। আপনি সবসময়ই শূন্য থেকে ইনিংস শুরু করেন, এর আগে সেঞ্চুরি করেছেন কি না তা ব্যাপার না। আর খেলাটি কেবল নিজের জন্য নয়, এটাই আমরা নিজেদের ভেতর জাগ্রত ছিল।’
এএইচএস