রাবাদার হ্যাটট্রিকে সান্ত্বনার জয় পেল দ. আফ্রিকা

সমীকরণের হিসেবটা ততক্ষণে শেষ। তবে ম্যাচের রোমাঞ্চটা শেষ হয়নি তখনো। সেই না শেষ হওয়া রোমাঞ্চটাই শেষ ওভারে বাড়ালেন কাগিসো রাবাদা। ভয়ংকর হয়ে ওঠা ক্রিস ওকসকে ফেরালেন, এরপরের দুই বলে অইন মরগ্যান আর ক্রিস জর্ডানকেও।
শেষ ওভারের প্রয়োজনীয় ১৪ রান আর তুলতেই পারল না ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের আগে তাতে দক্ষিণ আফ্রিকা পেল ১০ রানের সান্ত্বনার জয়।
সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণটা সহজ হলেও কাজটা কঠিনই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। তবু ব্যাটারদের নৈপুণ্যে ১৮৯ রান তুলে অর্ধেক কাজটা সেরে রেখেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ টসে জিতেছিল ইংলিশরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন অধিনায়ক অইন মরগ্যান। শুরুটা ভালো হয়নি প্রোটিয়াদের। ওপেনার রিজা হেনড্রিকসকে ১৫ রানেই হারিয়ে ফেলেছিল দলটি।
ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু এরপরই। ওপেনার কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে তিনে নামা ফন ডার ডাসেন গড়ে তোলেন ৭১ রানের জুটি। ৮৬ রানে ডি কক ফেরেন বটে, তবে বড় স্কোরের ভিতটা ততক্ষণে গড়া হয়ে গেছে প্রোটিয়াদের।
ডি ককের ফেরার পর মাঠে আসেন এইডেন মার্করাম। খেলেন ২৫ বলে ৫২ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। ওপাশে ডাসেনও ব্যাট চালিয়েছেন দারুণভাবেই। দুজনের জুটি তিন অঙ্কে পৌঁছে যায় মাত্র ৫১ বলেই। যাতে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ দশ ওভারে পায় ১১৬ রান, ইনিংস শেষ করে দুই উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান নিয়ে।
ব্যাটারদের মতো বোলাররা শুরুটা ভালো করতে পারেননি। পাওয়ারপ্লেতেই ইংল্যান্ড তুলে ফেলে ৬০ রান। দুই ইংলিশ ওপেনার এ সময় ফিরে গেছেন বটে, তবে প্রোটিয়াদের অর্জনের খাতায় উঠেছে কেবল একটা উইকেটই, জেসন রয় যে ফিরেছিলেন 'আহত অবসর' হয়ে। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আনরিখ নরকিয়া ফেরান জস বাটলারকে। পাওয়ারপ্লের পর প্রথম ওভারে জনি বেয়ারস্টো ফেরেন ১ রানে। তাতে বিদায়ের শঙ্কাও কি কিছুটা ঘিরে ধরেনি ইংলিশদের? ৯৩ রানের নিচে অলআউট হলেই যে অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিতে তুলে দিয়ে বিদায় নিত ইংল্যান্ড!
তিনে নামা মঈন আলী আর পাঁচে আসা দাভিদ মালান অবশ্য তা হতে দেননি। ২৭ বলে ৩৭ রান করে মঈন যখন ফিরছেন, ইংলিশদের বিদায়ের শঙ্কা তখন মিশে গেছে আরব সাগরে। এরপর দাভিদ মালান, লিয়াম লিভিংস্টোনের জুটিতে ইংল্যান্ড পার করে ১৩২ রান, দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনালের ক্ষীণ আশাও শেষ হয় তখন। দুজন ফেরেন শিগগিরই, তাদের পর মরগ্যানের ক্যামিওতে জয়ের দিকে এগোতে থাকে ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
হয়তো জিতেও যেত, যদি রাবাদা শেষ ওভারে পথ আগলে না দাঁড়াতেন। তাতে দশ রানে হারে দলটি, দক্ষিণ আফ্রিকা পায় সান্ত্বনার জয়।
তবে এই জয়কে ‘সান্ত্বনারও’ বলা যাচ্ছে না ঠিক। সেমিফাইনালের সব আশা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যেভাবে লড়েছে প্রোটিয়ারা, তুলে নিয়েছে জয়, তাতে একে 'মাথা উঁচু করা' বিদায় বলাটাই বোধ হয় বেশি যৌক্তিক হয়।
এনইউ