এশিয়া কাপে বাংলাদেশ, ব্যাট-বলে কার কত দৌড়?

Dhaka Post Desk

স্পোর্টস ডেস্ক

২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৯:২৫ পিএম


এশিয়া কাপে বাংলাদেশ, ব্যাট-বলে কার কত দৌড়?

এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের আসর এশিয়া কাপ। কিংবা বলা যেতে পারে আসন্ন ভারত বিশ্বকাপের ‘ড্রেস রিহার্সাল’। আইসিসির বড় এই আসরে বাংলাদেশ কেমন করতে পারে, তার কিছুটা ধারণা মিলবে এশিয়া কাপে। আগামীকাল-ই (৩০ আগস্ট) পর্দা উঠতে যাচ্ছে এবারের পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় আসরটির।

একদিকে আশার ভেলা, অন্যদিকে চোট-জ্বরাক্রান্ত বাংলাদেশের টিম কম্বিনেশন মেলানোর চ্যালেঞ্জ। তবে তার আগে কিছুটা পেছনে ফেরা যাক, বিগত এশিয়া কাপের আয়নায় কেমন ছিল বাংলাদেশের মুখাবয়ব? যেখানে আছে টাইগার ক্রিকেটের স্মরণীয় সব মুহূর্ত এবং ভুলে যাওয়ার মতো কিছু স্মৃতি।

এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপের ১৫টি আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে দুটি আসর ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের। বাকি ১৩টি ছিল ওয়ানডে সংস্করণের। এখন পর্যন্ত কেবল তিনটি আসরেই ছিল না টিম টাইগার্সের উপস্থিতি। ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের। দুই বছর পরে অনুষ্ঠিত আসর থেকেই বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে আসছে।

আরও পড়ুন >> বাংলাদেশের ‘গলার কাঁটা’ ওপেনিং

১৬তম আসরে অংশ নিতে ইতোমধ্যে শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এর আগে অংশ নেওয়া টুর্নামেন্টটিতে টাইগারদের সর্বোচ্চ অর্জন তিন আসরের রানার্স-আপ। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপেও সর্বশেষ ফাইনাল খেলেছিলেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালরা। তবে সেবারও তাদের শিরোপা জয়ের বহুল কাঙ্ক্ষিত সেই মুহূর্ত ধরা দেয়নি। ভারতের বিপক্ষে একেবারে তীরে গিয়ে ৩ উইকেটে পরাজয়ের হতাশা নিয়ে ফিরতে হয় টাইগারদের।

এশিয়া কাপের শুরু থেকে দারুণ আধিপত্য ভারত ও শ্রীলঙ্কার। রোহিত শর্মাদের দেশ সর্বোচ্চ ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের চেয়ে একটি (৬) ট্রফি কম শ্রীলঙ্কার। এছাড়া পাকিস্তান এশিয়ানদের শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছে দুই বার।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ম্যাচভিত্তিক পরিসংখ্যান

১২টি আসরে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে মোট ৫০টি। এর ভেতর ৪৩টি ওয়ানডে ম্যাচের কেবল ৭টিতে জয় (মাত্র ১৬ শতাংশ) এবং ৭টি টি-টোয়েন্টি সংস্করণের ম্যাচে টাইগাররা তিন ম্যাচে জয় পেয়েছে। অর্থাৎ, এশিয়অনদের এই টুর্নামেন্টের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের অতীত অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর নয়, যেখানে তাদের হার ৩৬টি। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ৪টি ম্যাচে হেরেছে।

১৯৮৮ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ। এ নিয়ে মোট পাঁচবার (২০০০, ২০১২, ২০১৪ এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে) তারা এশিয়া কাপের আয়োজন করে। আয়োজক দেশ হিসেবে যা সর্বোচ্চ।

এশিয়া কাপে টাইগার ব্যাটারদের অর্জন

dhakapost

লাল-সবুজ জার্সিতে রান সংগ্রহে সবার শীর্ষে আছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। ২১ ম্যাচে তিনি ৩৬.৭৮ গড় ও ৮৪.৫২ স্ট্রাইক রেট নিয়ে ৬৯৯ রান করেছেন। এশিয়ানদের এই টুর্নামেন্টে মুশফিক দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন। এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানও তার। দুবাইতে অনুষ্ঠিত ২০১৮ আসরে ‘মিস্টার ডিফেন্ডেবল’ করেছেন ১৪৪ রান (১৫০ বল)।

আরও পড়ুন >> বাংলাদেশকেও হিসেবের খাতায় রাখছেন ওয়াসিম

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করা তামিম ইকবালের ব্যাটে এসেছে ৫১৯ রান (১৩ ম্যাচে)। এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সমান ম্যাচ খেলে করেছেন ৪০২ রান। তবে সর্বনিম্ন একশ রান করা ব্যাটারদের মধ্যে স্টাইকরেটের দিক থেকে সাকিবই সবার উপরে (১০৩.০৭)।

মুশফিক ছাড়া আরও পাঁচ বাংলাদেশি ক্রিকেটার এশিয়া কাপে সেঞ্চুরি করেছেন। একটি করে সেঞ্চুরি আছে লিটন দাস, মোহাম্মদ আশরাফুল, এনামুল হক বিজয় ও অলক কাপালির।

যেকোনো উইকেটে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ জুটির মালিক জুনায়েদ সিদ্দিকি ও ইমরুল কায়েস। ২০১০ সালে দ্বিতীয় উইকেটে তারা ১৬০ রান যোগ করেছিলেন। শ্রীলঙ্কায় ডাম্বুলায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান।

বল হাতে টাইগারদের খতিয়ান

বোলিংয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে উজ্জ্বল সাবেক বাঁ-হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। ১৮ ম্যাচে তিনি সর্বোচ্চ ২২টি উইকেট পেয়েছেন, গড় ৩৬.১৮। এরপর ১৯ উইকেট নিয়ে সাকিব (১৩ ম্যাচ) এবং ১৮ উইকেট নিয়ে তার পরের অবস্থান সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার (১৯ ম্যাচ)।

আরও পড়ুন >> এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব : তাসকিন

dhakapost

এশিয়া কাপের এক ইনিংসে টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট করে নিয়েছেন সাইফুল ইসলাম, সাকিব ও মুস্তাফিজুর রহমান। অর্থাৎ, এখন পর্যন্ত দেশীয় কোনো বোলারই ফিগার ফাইভের দেখা পাননি। ১৯৯৫ সালে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেওয়া সাইফুলের ইনিংসটি টাইগারদের সেরা বোলিং ফিগার।

এশিয়া কাপের ১৬তম আসরের ১৩টি ম্যাচ ভাগাভাগি করে অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়। যার মধ্যে ৪টি ম্যাচ পাকিস্তানে এবং সেমিফাইনাল-ফাইনালসহ বাকি ৯ ম্যাচ হবে লঙ্কানদের মাটিতে। উদ্বোধনী দিনে আগামীকাল স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে নেপাল। এর পরেরদিন আরেক স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার মাটিতে তাদের বিপক্ষে প্রথম লড়াইয়ে নামবে সাকিবের দল। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ পাকিস্তানের লাহোরে হবে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর, প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। এছাড়া হাইভোল্টেজ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান আগামী ২ সেপ্টেম্বর ক্যান্ডিতে মুখোমুখি হবে।

এএইচএস

Link copied