তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে ‘ইয়ুথ স্কিলস কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ইয়ুথ স্কিলস কনফারেন্স-২০২৩’। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), ব্রিটিশ কাউন্সিল ও গ্রামীণফোন সম্মিলিতভাবে সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে কনফারেন্সের আয়োজন করে।
এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের সকল বিভাগ থেকে অংশগ্রহণকারী তরুণদের ‘গ্রিন স্কিল’ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানো এবং তাদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ারের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা।
কনফারেন্সের সেশনগুলো তরুণদের জন্য বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। প্রথম সেশনটি অংশগ্রহণকারী তরুণদের একটি শিক্ষণীয় সময় উপহার দেয়ার জন্য পরিচালিত হয়। এই সেশনে তারা দক্ষ প্রশিক্ষকদের কাছ থেকে বেশ কিছু বিষয়ে জানতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে - এসডিজি পরিচিতি, ভবিষ্যত উপযোগী কর্মদক্ষতার জন্য গ্রিন স্কিলস, গ্রিন স্টার্ট-আপ, এবং গ্রিন স্কিল ও এসডিজি কিভাবে একে অপরের পরিপূরক। এর সাথে এসডিজি নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ইউএনভি’র পক্ষ থেকে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপিত হয়। কনফারেন্সে ভবিষ্যত কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও এই লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়, যাতে বিভিন্ন শিল্পখাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কনফারেন্সের বিশেষ আকর্ষণ ছিল দেশের ৮ টি বিভাগ থেকে আসা ১৩ টি যুব-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নমূলক উদ্যোগের প্রদর্শনী। দেশের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে এমন সৃজনশীল সমাধান ও চিন্তার প্রতিফলন ঘটানো উদ্যোগগুলো অংশগ্রহণকারী তরুণদের অনুপ্রাণিত করে।
সম্মেলনের শেষ সেশনটি ছিল “ইয়ুথ টক”। যেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার (হার এক্সিলেন্সি) সারাহ কুক বলেন, আজকের সম্মেলনে তরুণদের উপস্থিতি দেখে খুবই ভালো লাগছে, এবং আমি আনন্দিত যে তারা ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং ইউএনডিপির আয়োজনে নিজেদের দক্ষতা বিকাশ করতে পারছে। যুক্তরাজ্যে দারিদ্র্য মোকাবেলা, নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শিক্ষা ও দক্ষতার গুরুত্ব প্রচার করা। এর মাধ্যমে আমরা আরও সমৃদ্ধ সমাজ তৈরি করতে পারব। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক পরিসরে অগ্রসর হতে আমরা বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। ক্যারিয়ার গড়ার জন্য দক্ষতা তৈরি করে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তার মাধ্যমে, আজ এখানে উপস্থিত তরুণরা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টম মিসোসা বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত তরুণদের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন, গ্রিন টেকনোলোজি এবং পরিবেশ স্টুয়ার্ডশিপ নিয়ে আগ্রহ ও আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ভবিষ্যত উন্নয়নের কর্মসূচিতে আমাদের সমঝোতার অংশ হিসেবে এই যুব সম্মেলনে ইউএনডিপির সাথে কাজ করতে পেরে ব্রিটিশ কাউন্সিল আনন্দিত। আমরা শিক্ষার অনন্য শক্তিকে একযোগে কাজে লাগাতে চাই এবং সারাদেশের তরুণদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধি করে তাদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হবার সম্ভাবনা বাড়াতে চাই। ইংরেজি শিক্ষা এবং শিল্পকলায় জীবনমুখী সুযোগ তৈরির মাধ্যমে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মকে দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প ২০৪১-এর যাত্রাকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে জনমিতিক লভ্যাংশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ যাত্রায় আমাদের তরুণদের দক্ষ করে তুলতে হবে, এবং এটা করার এখনই সময়। আজ আমরা ইয়ুথ স্কিলস কনফারেন্স ২০২৩ -এর আয়োজনে সকলে একত্রিত হয়েছি। আমাদের মাঝে উপস্থিত আছেন প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময় অসংখ্য তরুণ, যাদের মধ্যে অমিত সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে। এ সম্মেলন সবাইকে একত্রিত করার পাশাপাশি দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানায়। ভবিষ্যতের শিল্পখাতের জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে, এবং আমার বিশ্বাস এ যাত্রাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে ফিউচারনেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।