ব্যস্ত শহরে প্রতিদিনের যাত্রীদের সবচেয়ে বড় ভোগান্তির নাম যানজট। এই সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি দিচ্ছে অ্যাপ-নির্ভর বাইক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস। বাইক সহজেই সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারে। যার ফলে যাত্রীরা তুলনামূলক কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। 

অফিসগামী, শিক্ষার্থী কিংবা জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষদের জন্য এটি একটি সময়-সাশ্রয়ী ও কার্যকর বিকল্প। পাশাপাশি বাইকে জ্বালানি খরচ কম, রাইড ভাড়া সাশ্রয়ী এবং অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই বুকিং করা যায়। তাই শহরের যানজটে বাইক রাইড শেয়ারিং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। 

অ্যাপ-নির্ভর বাইক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস থেকে সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন শহরের ব্যস্ত যাত্রীরা, যারা দ্রুত ও সাশ্রয়ী যাতায়াত চান। যানজটপূর্ণ পরিবেশে অফিসগামী, শিক্ষার্থী, এমনকি জরুরি কাজের লোকজন সময় বাঁচিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। 

পাশাপাশি রাইডাররাও সরাসরি উপকৃত হচ্ছে। কারণ তারা বাইক চালিয়ে আয় করতে পারছে- বিশেষ করে তরুণ ও বেকার যুবকদের জন্য এটি একটি বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। 

এছাড়াও, রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোও লাভবান হচ্ছে। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবহণ খাতে ও নগর অর্থনীতিকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে এসেছে। 

চলুন জেনে নেয়া যাক অ্যাপ-নির্ভর বাইক রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের সুবিধা ও অসুবিধা- 

সুবিধা 

অ্যাপ-নির্ভর বাইক সার্ভিস শহুরে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ট্রাফিক জ্যামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট হওয়া, গণপরিবহনের অপেক্ষা বা অতিরিক্ত ভাড়া গুনে ট্যাক্সি পাওয়ার যন্ত্রণা; সবকিছুর সহজ সমাধান হয়ে উঠেছে এই অ্যাপ-নির্ভর বাইক রাইডিং সেবা। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি কম ভাড়ায় চলাচল করাও সম্ভব হয়েছে। যাত্রী চাইলে ঠিকানা অনুযায়ী লোকেশন পিন করে বাইক ডাকতে পারেন, যা অতিরিক্ত ঝামেলা ছাড়াই রাইড নিশ্চিত করে। 

পাশাপাশি চালক ও যাত্রী উভইয়ের ব্যক্তিগত তথ্য অ্যাপে সংরক্ষিত থাকায় জরুরি প্রয়োজনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থাও রয়েছে। আবার বেশিরভাগ অ্যাপে ভাড়া আগে থেকেই নির্ধারিত থাকায় দরকষাকষির ঝামেলা থাকে না। অনেক অ্যাপে রেটিং ও রিভিউয়ের সুবিধার কারণে যাত্রী ও চালক উভয়েই সচেতন থাকেন সেবার মান নিয়ে। 

অসুবিধা 

তবে এই খাতে কিছু গুরুতর অসুবিধাও রয়েছে।  অনেক চালকই পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াই বাইক রাইড শেয়ারিংয়ে যুক্ত হচ্ছেন। ফলে বেপরোয়া চালনা, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও পর্যাপ্ত নয়, বিশেষ করে নারী যাত্রীরা অনেক সময় অসুবিধায় পড়েন চালকের আচরণ বা চলার পথে অনিরাপদ পরিস্থিতির কারণে। কিছু চালক অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন বা অ্যাপের বাইরে গিয়ে ক্যাশ রাইড করতে চান, যা যাত্রীদের জন্য হয়রানির কারণ হতে পারে। 

এছাড়া বৃষ্টির দিনে বা ব্যস্ত সময়ে রাইড পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া কিংবা অ্যাপ সমস্যাও যাত্রীদের ভোগান্তির কারণ হতে পারে। অনেক সময় অ্যাপে সমস্যার কারণে রাইড বুকিং ভেঙে যায় বা বিলিং সংক্রান্ত জটিলতাও দেখা দেয়। 

এমবি/এনএইচ