জেট ফুয়েলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, এয়ারক্রাফটের যন্ত্রাংশ আমদানিতে উচ্চ করসহ পৃথিবীর এভিয়েশন খাত যখন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি, এই সময়ে দেশের আকাশে ডানা মেলতে যাচ্ছে বেসরকারি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান এয়ার অ্যাস্ট্রা।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ভোরে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করছে তারা। এয়ার অ্যাস্ট্রার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, ক্যাটারিং, মেইনটেন্যান্স সহযোগিতা করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

আরও পড়ুন>>‘যাত্রী সেবার মাধ্যমে আস্থা অর্জন করবে এয়ার অ্যাস্ট্রা’

বাংলাদেশে বেসরকারি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসটা সুখকর নয়। ১৯৯৭ সালে অ্যারো বেঙ্গলের মাধ্যমে দেশে বেসরকারি এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করে। একে একে ১২টি বেসরকারি এয়ারলাইন্স আসলেও টিকে আছে কেবল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার। তৃতীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে এই চ্যালেঞ্জিং মাঠে পা রাখছে এয়ার অ্যাস্ট্রা।

এয়ার অ্যাস্ট্রা জানায়, ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে এয়ার অ্যাস্ট্রার দুইটি এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের এয়ারক্রাফট দেশে পৌঁছেছে। এগুলোতে মোট সিট সংখ্যা ৭০টি। এবছর একই মডেলের আরও দুইটি এয়ারক্রাফট যুক্ত হবে তাদের বহরে। ২০২৩ সালে আরও ৬টি এয়ারক্রাফট এনে ১০টির বহর তৈরি করবে এয়ার অ্যাস্ট্রা।

এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ইমরান আসিফ। তিনি রিজেন্ট এয়ারওয়েজ এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাবেক সিইও ছিলেন।

আরও পড়ুন>>দেশের আকাশে ডানা মেলতে প্রস্তুত এয়ার অ্যাস্ট্রা

নতুন এই এয়ারলাইন্সটির সম্পর্কে ইমরান আসিফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতি ছাড়াও জেট ফুয়েলের দাম এবং মার্কিন ডলারের দাম একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সব ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাই করেই এয়ার অ্যাস্ট্রা ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, প্রায় ৯ বছর পর বাংলাদেশে একটি নতুন এয়ারলাইন্স হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পেরে এয়ার অ্যাস্ট্রা গর্বিত। আমরা নিরাপদ যাত্রীসেবা ও সময়ানুবর্তীতার মাধ্যমে যাত্রীদের সবচেয়ে পছন্দের ও নির্ভরযোগ্য এয়ারলাইন হিসাবে নিজের প্রতিষ্ঠিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

ফ্লাইট পরিচালনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে ইমরান আসিফ বলেন, নিয়মানুযায়ী এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট (এওসি) পাওয়ার পর ১ বছর অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হয়। আমরা একবছর সব অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করব (বরিশাল ছাড়া)। একবছর নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনার পর আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আবেদন করব। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেলে আমরা এয়ারক্রাফট লিজ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করব। এতে আরও একবছর সময় লেগে যেতে পারে।

প্রথমে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম, এরপর সারা দেশ

দুই এয়ারক্রাফট দিয়ে প্রথমে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটে দৈনিক ৩টি ও ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ২টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ার অ্যাস্ট্রা। পর্যায়ক্রমে বরিশাল ছাড়া দেশের সব অভ্যন্তরীণ রুটেই ফ্লাইট পরিচালনা করবে তারা।

আরও পড়ুন>>স্বাগতম-সুস্বাগতম এয়ারএ্যাস্ট্রা

ঢাকা থেকে কক্সবাজারের ওয়ান ওয়ে সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৭৯৯ টাকা এবং ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ওয়ান ওয়ে সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৯৪ টাকা।

অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীদের পছন্দের সুযোগ বৃদ্ধি পেল

নতুন এয়ারলাইন্স এয়ার অ্যাস্ট্রার আগমনের বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, দেশে এয়ার অ্যাস্ট্রা তাদের যাত্রা শুরু করার ফলে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের পছন্দের সুযোগ আরও বৃদ্ধি পেল। দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর ইতিবাচক প্রতিযোগিতায় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠিত হবে যা যাত্রীদের জন্য সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। আশা করি এয়ার এ্যাস্ট্রা যাত্রীসেবার মান ও নিরাপত্তা বজায় রেখে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

এআর/এমএ