ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যাত্রীদের চাপ

নির্মাণকাজের জন্য পরবর্তী ছয় মাস রাতে বন্ধ থাকছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকার কথা। তবে এ সিদ্ধান্ত থেকে হয়তো আজ রাতের জন্য সরে আসতে হচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। 

অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন না হওয়ায় রাত সাড়ে ১০টার পর শাহজালাল বিমানবন্দর ছেড়ে যায়নি কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। অনেক কাউন্টারেই ইমিগ্রেশন পুলিশের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, রাতে মধ্যপ্রাচ্যের ফ্লাইটে চাপ রয়েছে। রয়েছে যাত্রীদের চাপও। এ কারণে অধিকাংশ যাত্রীর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়নি। তাই নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট ছাড়া সম্ভব হয়নি। 

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে একটি বিদেশি এয়ারলাইন্সের এয়ারপোর্ট প্রতিনিধি ঢাকা পোস্টকে বলেছেন, বিমানবন্দরে বর্তমানে যাত্রীরা হইহুল্লোড় ও চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন। রাত সাড়ে ১১টায় আমাদের একটি ফ্লাইট ছাড়ার কথা থাকলেও অনেক যাত্রীর এখনো ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়নি।

রাতে সৌদি এয়ারলাইন্সের রিয়াদ ও জেদ্দাগামী, এমিরেটস এয়ারলাইন্সের দুবাইগামী, তার্কিশ এয়ারলাইন্স ইস্তাম্বুলগামী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রিয়াদগামী, বিমান বাংলাদেশ ও মালিন্দো এয়ারওয়েজের কুয়ালালামপুরগামী, বিমানের আবু ধাবিগামী ও কুয়েত এয়ারের কুয়েত সিটিগামীসহ ১৫-১৭টি ফ্লাইট চলাচল করার কথা।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিদেশগামীদের জন্য বিমানবন্দরের বহির্গমন টার্মিনালে মোট তিনটি গেটে ইমিগ্রেশন কাউন্টার রয়েছে। রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে মোট চার হাজার মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রী চলাচল করেন। এই তিনটি ইমিগ্রেশন গেট চার হাজার যাত্রীর জন্য পর্যাপ্ত নয়। আজ দুটি গেটের কাউন্টারে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চলছে। একটি সম্পূর্ণ বন্ধ। যে দুটি গেট খোলা, সে দুটোর অনেক কাউন্টারেও ইমিগ্রেশন অফিসার নেই। সব মিলে হযবরল অবস্থা। আজ রাতে হয়তো রানওয়ে বন্ধ রাখা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে জানতে শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল আহসানকে কমপক্ষে ১২ বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নতুন হাইস্পিড কানেকটিং ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণকাজের জন্য ১০ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার মধ্যরাত) থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত রানওয়ে বন্ধ থাকবে। এছাড়াও ১১ মার্চ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বেবিচক।

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন রানওয়ে বন্ধ থাকলেও বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কাজে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ সময় বাংলাদেশে কোনো এয়ারলাইন্সের জরুরি অবতরণের প্রয়োজন হলে তাকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, শাহজালাল বিমানবন্দরে শীতকালীন ফ্লাইট-সূচি শুরু হয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে মধ্যরাতের ফ্লাইটগুলোর সময়ও। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে শীতকালীন ফ্লাইটসূচি অনুসরণ করা হয়। কারণ এ সময় রাত ২টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকে। তাই রানওয়েতে ‘ভিজিবিলিটি’ কম থাকে বলে উড়োজাহাজের অবতরণে সমস্যা হয়। এ সময়ের মধ্যে জরুরি অবতরণের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ফ্লাইট অন্য যেকোনো বিমানবন্দরে পাঠাতে হয়।

এআর/আরএইচ