গত ২৩ মার্চ ‘চাকরির মেয়াদ শেষ, তবুও জাবির রেজিস্ট্রার তিনি’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবাদলিপি ঢাকা পোস্টের অফিসে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, সংবাদটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আজ এক প্রতিবাদপত্রে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার উল্লেখ করেন যে, প্রচারিত সংবাদটি উদ্দেশ্যমূলক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান চাকরিবিধি ও নিয়ম-নীতির পরিপন্থী। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক নিজে ভালোভাবে না জেনে এবং না বুঝে এই সংবাদ পরিবেশন করেছেন, যাতে তার ভাবমূর্তি ও সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি প্রচারিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।

প্রতিবাদপত্রে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার উল্লেখ করেন, গত ২৮/০৮/২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় ‘সেশন বেনিফিট’ তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়, যা নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তীতে সিনেট ও সিন্ডিকেট সভা করে রহিত করে বাস্তবায়ন করতে হবে। করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশন করা সম্ভব হয়নি বিধায় সেশন বেনিফিট এখনও বলবৎ রয়েছে। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সেশন বেনিফিটের সুবিধা ভোগ করে এ বছর ২৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক, ১৫ জন কর্মকর্তা এবং ১২জন কর্মচারী এলপিআর-এ যাচ্ছেন। তাই এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং রেজিস্ট্রারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংশ্লিষ্ট সংবাদদাতা তার মনগড়া বক্তব্য দিয়ে এ সংবাদ পরিবেশন করেছেন।

প্রতিবেদকের বক্তব্য

প্রতিবেদনটিতে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই। এতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য দিল আফরোজা বেগম ও স্বয়ং রেজিস্ট্রারের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে বলা হয়েছে সেশন বেনিফিট বাতিল করা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য দিল আফরোজা বেগম বলেছেন, সেশন বেনিফিট অনেক আগেই উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তিনি কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকতে পারেন না। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকেন, সেটা অনৈতিক হয়েছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে তার বিরুদ্ধে যা করা যায় করব।

অন্যদিকে প্রতিবেদনে উল্লেখিত রেজিস্ট্রারের বক্তব্যে রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেছেন, গত ৩০ অক্টোবর ছিল আমার শেষ কর্মদিবস। এরপর ১ তারিখে উপাচার্য আমাকে অফিস করতে বলেন। আমি নিজেও দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম অফিস করবো কিনা। আমাকে তৎকালীন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য অফিস করার কথা বলেন, তখন আমি অফিসে আসি।

সুতরাং ইউজিসি সদস্য দিল আফরোজার বক্তব্য অনুযায়ী, রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা এবং চাকরিতে বর্তমান থাকাটাকে অনৈতিক বলা প্রমাণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পরও তার অনুগত ব্যক্তিদের প্রশাসনে রেখেছেন।

প্রতিবেদনটিতে যেহেতু প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য তুলে ধরা হয়নি। সেহেতু প্রতিবেদনকে ‘উদ্দেশ্যমূলক ও সংবাদদাতার মনগড়া বক্তব্য’ বলার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

আরএআর