ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগের কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে হলের পদ্মা ব্লকের ২০১০ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. আখলাকুজ্জামান অনিক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। আহত হয়ে তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ছাত্রলীগের ওপর হামলার অভিযোগ এনে এবং এর বিচার চেয়ে ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে ১০-১২ জন হামলায় অংশ নেন বলে জানান তিনি। তবে প্রাথমিকভাবে উল্লেখ করেছেন চারজনের নাম।

অভিযুক্তরা হলেন, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের মাসফিউর রহমান, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সফিউল্লাহ সুমন (পিটার), ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাব্বির আল হাসান, সাংবাদিকতা বিভাগের নাইমুর রশিদ নাঈম।

হামলাকারীরা হল শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান সজীবের অনুসারী বলে জানা গেছে। সজীব ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী।

হামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অনিক বলেন, ‘সকালের দিকে আমি ঘুমে ছিলাম। দরজায় হঠাৎ নক করার শব্দ পাই। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে আকস্মিকভাবে ১০ থেকে ১২ জন কক্ষে ঢুকে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমি হতভম্ব হয়ে যাই। এ সময় তারা স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং শরীরের অন্যান্য জায়গায় এলোপাতাড়ি আঘাত করে।’

তিনি বলেন, ‘বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিচ্ছি। হামলাকারীদের মধ্যে শুধু চারজনকে চিনতে পারি। আজ আমার স্নাতকোত্তর ২য় সেমিস্টারের অভিনয় কোর্সের পরীক্ষা আজ সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে।’

এ হামলার পেছনে কোনো কারণ ছিল কি না জানতে চাইলে অনিক বলেন, ‘আজ থেকে তিন দিন আগে হামলাকারীদের কে নাকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিল মেয়ে নিয়ে। তাদের অভিযোগ, আমি তাদের সঙ্গে সেখানে দুর্ব্যবহার করেছি। অথচ সেদিন আমার পরীক্ষা ছিল। হামলার সময় তারা আমার ফোন কেড়ে নেয়।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ না করায় তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান সজীব ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘পূর্ব একটি ঘটনার জের ধরে আজকের এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে হল প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। এক্ষেত্রে আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে।’

জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার সাধারণ সম্পাদক আমরা দুজন দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। হল প্রশাসনকে ঘটনাটি যাচাই-বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি। যদি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন মনে হয় এবং আমাদের সিনিয়র নেতারা নির্দেশনা দেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। ইতোমধ্যে দায়িত্বরত শিক্ষককে সেখানে পাঠিয়েছি। তিনি কথা বলেছেন। আমরা কাল (রোববার) সকালে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

এইচআর/আরএইচ