বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ২৬শে মার্চ ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের একপক্ষ সড়ক অবরোধ করেছে। এ সময় তারা একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও ধারণ করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে মারধর করেন। এমনকি তার মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয়।

সোমবার (২৮ মার্চ) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম সংলগ্ন নিরাপত্তা শাখার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের একপক্ষ। তারা বাকৃবির হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, ফজলুল হক হল, শামসুল হক হল ও ঈশা খাঁ হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।

বিক্ষোভের একপর্যায়ে নিরাপত্তা শাখার উভয় পাশের সড়ক বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করেন তারা। বেধড়ক মারধর করা হয় ড্রাইভারসহ গাড়ির যাত্রীদেরও। গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও ধারণ করতে গেলে ময়মনসিংহ লাইভ অনলাইন পোর্টালে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা আবদুল্লাহ ওমর আসিফের ওপর চড়াও হয় শামসুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন সুমনসহ আরও অনেকে। এ সময় তারা আসিফকে মারধর করেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ ছিনিয়ে নেওয়া হয় তার মোবাইল। পরে আহত ওমর আসিফকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

ঘটনাস্থলে বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন, সহকারী প্রক্টর ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও ড. মো. রিজওয়ানুল হক উপস্থিত ছিলেন।

পরে সন্ধ্যার দিকে সাংবাদিক ওমর আসিফের ওপর হামলার ঘটনায় ওই হলগুলোর বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা ইমতিয়াজ আবির, আবু রায়হান মিথুন, সজীব চন্দ্র সরকার, নিলয় মজুমদার ও মিফতাহ সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান। এ ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটবে না বলেও তারা জানান।

আহত সাংবাদিক ওমর আসিফ বলেন, ‘ঘটনার সময় সাংবাদিক হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করছিলাম। এমন সময় একদল ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আমার ওপর হামলা করে। কয়েকজন মিলে কিল-ঘুষি ও লাথি মারে। আমি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এদিকে অভিযুক্ত শাহীন সুমন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আন্দোলনে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমি কারও গাঁয়ে হাত তুলিনি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এমএইচএস