ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধ্যয়নরত কক্সবাজার জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘কক্সবাজার স্টুডেন্টস ফোরাম’-এর কমিটি গঠন নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে একটি দুইটি কমিটি নয় পাল্টাপাল্টি চারটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।

গত রোববার (৩ এপ্রিল) রাতে কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতি নোমান পারভেজ শাহ ও সাধারণ সম্পাদক মিরাছ উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সালমান সাদিককে সভাপতি ও আরফাতুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পরের দিন (৪ এপ্রিল) রাতে এই কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে আরেকটি নতুন কমিটি গঠন ঘোষণা করেন নিজেদের উপদেষ্টা দাবি করা ফোরামের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থী। সেখানে সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল রহমানকে এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইমুন ইসলাম বাপ্পিকে।

কমিটি গঠন নিয়ে দুইপক্ষ অভিযোগ তোলে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন। ফোরামের বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই কমিটি দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় কমিটিটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে অন্য আরেকটি কমিটি অনুমোদন দেওয়া সিনিয়র শিক্ষার্থীরা বলছেন বর্তমান কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের স্বার্থে অছাত্রদের নিয়ে কমিটি দিয়েছেন। কোনো শিক্ষার্থী এই কমিটি না মানায় তারা আরেকটি কমিটি দিতে বাধ্য হয়েছেন।

এছাড়াও আরও দুইটি কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেস রিলিজ আকারে প্রকাশ করা হয়। যদিও সেখানে কারো স্বাক্ষর নেই। বলা হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ থেকে এই দুইটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, এসব কমিটির আদৌ কোনো কাজ নেই। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নেতারাই পদ নিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে এবং নিজেদের স্বার্থে পদ ব্যবহার করে। বছরে একটা নবীনবরণ এবং পদ পাওয়ার পর নেতাদের সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় ছাড়া শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো কাজ করেন না তারা।

তারা জানান, পাল্টাপাল্টি কমিটি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় বিরক্ত এবং কমিটি নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিরাছ উদ্দীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমত আমাদের কমিটিতে কোনো উপদেষ্টাই নেই। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা কমিটি ঘোষণা করেছি। পরবর্তীতে নিজেদের উপদেষ্টা দাবি করে যে কমিটি দেওয়া হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ ভুয়া এবং নিয়মবহির্ভূত।

নিজেকে ওই কমিটির উপদেষ্টা দাবি করা সেলিম উল্লাহ সুজন ঢাকা পোস্টকে বলেন,  কারো সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে ওই কমিটিটা ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতি যাকে দেওয়া হয়েছে তার কোনো ছাত্রত্ব নেই। আমরা যাদের কমিটিতে রেখেছি সবাই নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং সবার সম্মতিতে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম যে কমিটি দেওয়া হয়েছে সেটা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে, আমাদেরটা সবাই গ্রহণ করেছে।

আরেক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মুনতাসির বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রথম যে কমিটি দিয়েছিল তারা কারো সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাদের এই কমিটি না মানায় আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে নতুন কমিটি দিতে বাধ্য হয়েছি। কক্সবাজারে যেখানে ৯টি উপজেলা আছে সেখানে একটা উপজেলার একটা ওয়ার্ড থেকেই দুইজন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়।

এইচআর/আইএসএইচ