খাদ্য নিরাপত্তার ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি ইন সাউথ এশিয়া (সিসিএফএস) শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তাগিদ দেন তিনি।

বুধবার (১৮ মে) বিকেলে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এবং ইউএনইএসসিএপির সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চ (সিএনআরএস) যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। 'সিসিএফএস’-এর আন্তর্জাতিক কমিটির চেয়ারম্যান ড. মান্নাভা শিভাকুমার, ঢাকার ফ্রান্স দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মি. গুইলাউমি অদ্রিন দি কারদেল, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি মি. রবার্ট ডগলাস সিম্পসন, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিব অধ্যাপক ড. পিট্টারি তালাস এবং সিএনআরএসর গবেষণা পরিচালক ড. থিয়েরি হিউলিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সম্মেলন আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. এএইচএম মুস্তাফিজুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত জীবন ও জীবিকার ক্ষয়ক্ষতি পূরণে এগিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই বৈশ্বিকভাবেই এর প্রতিকার করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তার ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তাদের সোচ্চার হতে হবে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য উন্নত দেশগুলোকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। উচ্চ ফলনশীল এবং বন্যা, খরা ও লবণাক্ত সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনের জন্য আরও গবেষণা চালানোর ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, টেকসই পরিবেশ এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জনগোষ্ঠীর নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাব প্রশমন এবং পানির নিরাপদ উৎস নিশ্চিত করতে সরকার ইতোমধ্যেই ডেল্টা প্ল্যান ২১০০' প্রণয়ন এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করেছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় যৌথ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন গবেষকদের জন্য একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

এইচআর/এসকেডি