অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান/ ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সিনিয়র দুই ছাত্রীকে হেনস্তা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বরাবর পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।

১৬ মে সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন চত্বর এবং ১৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে এসব ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম রাকিবুল হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।

টিএসসির ঘটনায় ভুক্তভোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে শিখা চিরন্তন চত্বরের ঘটনায় ভুক্তভোগী ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। থাকেন মিরপুরে।

টিএসসির ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত রোববার (১৫ মে) টিএসসি প্রাঙ্গণে অবস্থানকালে একটা ছেলে অনেকক্ষণ ধরে আমাকে উদ্দেশ করে বাজে মন্তব্য করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার আরও কাছে এসে অত্যন্ত অশালীন ও অভদ্র ইঙ্গিত দিতে থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি তার অশালীন আচরণের কারণ জানতে চাইলে উল্টো আমার ওপর চড়াও হয়ে নানা হুমকি দিয়ে চলে যায়।

ওই শিক্ষার্থী আরও উল্লেখ করেন, আমি তাকে ক্যাম্পাসের ছাত্রী পরিচয় দিয়ে আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে অবহিত করলেও সে তার অবস্থান থেকে নিবৃত্ত হয়নি।

এ অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত রাকিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনাটা ভুল বুঝাবুঝি। আমি আমার বান্ধবী মনে করে ওই আপুকে ডাক দিয়েছিলাম। এরচেয়ে বেশি কিছু নয়। পরে আমি ভুল বুঝতে পারি এবং আপুকে বিষয়টি জানাই। আমি উনাকে উত্যক্ত কিংবা খারাপ কোনো কথা বলিনি।

শিখা চিরন্তনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী আরেক ছাত্রী বলেন, গত সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমি, আমার বন্ধু এবং বন্ধুর মা ঘুরতে আসি। বন্ধুর মা চলে যাওয়ার পর আমরা শিখা চিরন্তনের পাশে বসে নিজেদের মধ্যে কথা করছিলাম। এসময় একটা মোটরসাইকেলে রাকিবসহ তিনজন ছেলে এসে আমরা ক্যাম্পাসের কি না জিজ্ঞেস করে।
পরে না বললে তারা আমার সঙ্গে থাকা বন্ধুকে একপাশে নিয়ে গিয়ে মারধর করে, একপর্যায়ে আমাকে হয়রানি করে। আমি চেঁচামেচি শুরু করলে তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।

এ অভিযোগও অস্বীকার করেন রাকিব। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, যে সময়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে বলা হচ্ছে সেসময় আমি আমার বন্ধুর সাথে ছিলাম। তাকে সময় দিচ্ছিলাম। এখানে আমার জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। আপুটি আমাকে কীভাবে চিহ্নিত করেছে সেটি আমি জানি না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, টিএসসির বিষয়টি দেখা হচ্ছে। আর উদ্যানের ঘটনার অভিযোগপত্রটি আমি এখনো পাইনি। তবে বিষয়টি জেনেছি। মেয়েটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার অভিযোগ রাখার কোনো সুযোগ নেই। মেয়েটিকে আমি পরামর্শ দিচ্ছি, সে যেন তার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায় এবং প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়। আমাদের তরফ থেকেও সহযোগিতা করা হবে।

এইচআর/এসকেডি