সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যা ও নড়াইলে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শিক্ষক স্বপন কুমারকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী বিশবিদ্যালয়ের (ইবি) ছয় শিক্ষক।

মঙ্গলবার মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব মুর‌্যালের পাদদেশে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অধ্যাপক ড. তপন কুমার, অধ্যাপক ড. বিকাশ চন্দ্র সিংহ, সহযোগী অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া ও বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম।

শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষক হত্যা বা লাঞ্ছনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। না হলে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে প্রতিদ্বন্দী বানানো হচ্ছে। এসব ঘটনা মোটেই কাম্য নয়। এসব ঘটনায় দোষীদের অতি দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, শিক্ষক হত্যা বা  লাঞ্ছনা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। যা কখনোই কাম্য নয়। শিগগিরই জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যেন এমন ঘটনায় পুনরাবৃত্তি না হয়।

একই দাবিতে তীব্র নিন্দা ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদলিপি দিয়েছে ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট। সংগঠনটির সভাপতি ড. কাজী আখতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. তপন কুমার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানান তারা।

উৎপল কুমার আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২৫ জুন দুপুরে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠে উৎপল কুমারকে স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতু। ঘটনার পর তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। ২৭ জুন ভোরে তার মৃত্যু হয়। 

আর মহানবীকে কটূক্তির জেরে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নুপুর শর্মার সমর্থনে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন বিক্ষোভ ও সহিংসতা চলে কলেজ ক্যাম্পাসে। এরপরেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে, পোস্টদাতা ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস। এ ঘটনার পর পুলিশ পাহারায় তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাকে দাঁড় করিয়ে পুলিশের সামনেই গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। পরে তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।

রাকিব হোসেন/এনএফ