যৌন হয়রানির শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ছাত্রী
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের চার ছাত্রী মধ্যরাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ক্যাম্পাস-সংলগ্ন শেখপাড়া এলাকায় ছাত্রী মেসে বখাটেরা বাইরে থেকে তাদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ওই ছাত্রী মেসে এমন ঘটনার শিকার হন তারা। ওই দিন রাত ১২টার দিকে বখাটের দল মেসের পাশে এসে ছাত্রীদের হয়রানি করতে থাকেন। এ সময় জানালার ফাঁকা অংশ দিয়ে ভেতরে তাকানো ও অশ্লীল মন্তব্য করেন বখাটেরা। এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে ও দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন ছাত্রীরা।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে বখাটেরা চলে গেলেও ৩টার দিকে তারা আবারও ফিরে আসেন। এতে ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে মেস মালিকের কক্ষে আশ্রয় নিলেও বখাটেরা হয়রানি চালিয়ে যায়।’
শিক্ষার্থীরা বলেন, হল বন্ধ রেখে বিভাগের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলে আমরা চারজন মিলে শেখপাড়া এলাকার ওই মেসে উঠি। মেস মালিকের স্ত্রী ও এক মেয়ে তাদের সঙ্গে থাকতেন। প্রায়ই পাড়ার বখাটেরা মেসের আশেপাশে ঘুরাফেরা করে তাদেরকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতেন।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় আতঙ্কিত ছাত্রীরা সহপাঠীদের মাধ্যমে ইবি থানা পুলিশকে জানালে তারা ওই এলাকা শৈলকুপা থানার অধীন হওয়ায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে শৈলকুপা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে শৈলকুপা থানা পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। পুলিশ মেস মালিকের স্ত্রী ও ভুক্তভোগী ছাত্রীদের সাথে কথা বলে চলে যায়।
শৈলকুপা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিক সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা প্রায়ই এমন হাঁটার শব্দ শুনতাম। কিন্তু গত রাতে খুব বাজে ভাষায় তারা কথা বলছিল। ‘আমাদের বর্ণনা দিয়ে এমনভাবে দিচ্ছিল’ মনে হচ্ছিল ওরা আমাদের দেখতে পাচ্ছেন।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ছাত্রীরা বাড়ি যেতে চাওয়ায় তাদের মালামাল হলে রেখে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা মেস মালিকের সাথে কথা বলে অভিযুক্তদের নাম জানার চেষ্টা করছি। যেহেতু এটা ক্যাম্পাসের বাইরে তাই কারও নাম জানা গেলে আমরা সে অনুযায়ী অভিযোগ দাখিল করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে প্রক্টর ও পুলিশের সাথে কথা বলেছি। পাশাপাশি অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি।’
এমএসআর