শিক্ষার্থী না হয়েও ‘ভুয়া’ পরিচয়ে সাড়ে তিন বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছেন সাজিদ উল কবির নামে এক তরুণ। বিভাগের ১৩তম ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা এমনকি আচার-অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেছেন বৈধ শিক্ষার্থীর মতোই। সর্বশেষ আজ বুধবার ষষ্ঠ সেমিস্টারের একটি কোর্সের পরীক্ষা চলাকালে ধরা পড়েন তিনি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ওই বিভাগের শিক্ষার্থী নন।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেন। ব্যাচের সবাই তাকে সহপাঠী ভেবে এসেছেন এতদিন। বুধবার (২৪ আগস্ট) একটি কোর্সের পরীক্ষা চলাকালে সন্দেহজনক পরিস্থিতি তৈরি হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় তিনি ছাত্রত্বের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ওই শিক্ষার্থী একটি রোল নম্বরে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, যেটি তার নয়। প্রাথমিকভাবে তাকে আমাদের বিভাগের ছাত্র নয় বলে শনাক্ত করেছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসের প্রতিনিধিদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘ছাত্রলীগের ব্যানারে নয়, ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছি’

সন্ধ্যায় ওই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রক্টর অফিস ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাই করে জানা গেছে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে তার পড়াশোনার অনেক ইচ্ছে ছিল, কিন্তু চান্স পাননি। তাই এক বন্ধুর সঙ্গে মাঝে মাঝে ক্লাস করতেন। কয়েকটি পরীক্ষাও দিয়েছেন। পরে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী স্বীকার করেছে এবং লিখিত দিয়েছে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়। অছাত্র ও বহিরাগত হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও বিভাগের অভিযোগের ভিত্তিতে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তারপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এইচআর/এসএসএইচ