শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর অভিধানে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর কোনো স্থান নেই। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা, কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তার ওপর নিপীড়ন বিলোপ করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রী বলেন,‘যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, যারা সাম্প্রদায়িক, তারা হীন-নীচ, তাদের অন্তর ছোট। যে মানুষকে ভালোবাসে, সে কখনোই সাম্প্রদায়িক হতে পারে না।’

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শতবর্ষপূর্তি ও বাংলার রুমি সৈয়দ আহমদুল হকের একাদশ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আল্লামা রুমি সোসাইটির সহযোগিতায় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সব ধর্মের প্রতি সম্মানবোধ ও ধর্মীয় সম্প্রীতির এ মানস বঙ্গবন্ধুর জীবনে হঠাৎ করেই ঘটেনি, বস্তুত তিনি ছিলেন সুফি-দরবেশ বংশ পরম্পরার ঐতিহ্যিক উত্তরাধিকারী। আজীবন এই সুফি মানসের ঐতিহ্যকে তিনি ধারণ করেছেন এবং অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির এক আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে সচেষ্ট থেকেছেন।

বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘এদেশে মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রের কারো নেই। হিন্দুরা তাদের ধর্ম পালন করবে, খ্রিস্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। যদি কেউ বলে যে, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে, আমি বলব, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়নি।’

শিক্ষামন্ত্রী  বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে যদি জালালুদ্দিন রুমির মানবতাবাদী প্রেম-দর্শন ও বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলোকে ধর্মীয় সম্প্রীতির এক নিরাপদ ও শান্তিময় জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, তাহলে বাংলার রুমির সেই একাডেমিক ডিসকোর্সকে অবলম্বন ও কার্যকর করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তার রচিত প্রেমবাদ ও সুফি সাহিত্যের অমূল্য সম্পদকে সংগ্রহ করে আমাদের জাতীয় জীবনে দেশমাতৃকার বৃহত্তর স্বার্থ সুরক্ষায় কাজে লাগাতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আল্লামা রুমি সোসাইটি বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ রেজাউল করিম, সোসাইটির উপদেষ্টা সৈয়দ মাহমুদুল হক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোশ অধ্যাপক ড. অমিত দে ও সম্মেলন আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও সম্মেলন আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন।

এইচআর/আরএইচ