প্রতীকী ছবি

ইউরোপ থেকে জোরপূর্বক বা স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত আসা অনিয়মিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের প্রতি নানা ধরনের অপবাদ বা কলঙ্ক কমানো এবং সমাজে তাদের সফল পুনঃএকত্রীকরণে একটি নতুন অপবাদ-বিরোধী প্রচারণা শুরু হয়েছে। ‘দ্য মাইগ্র্যান্ট প্রোজেক্ট’ নামে একটি প্রকল্প বিদেশফেরত অভিবাসী ও জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজের মাধ্যমে প্রচারণাটি এগিয়ে নেবে।

একটি আন্তর্জাতিক সামাজিক উদ্যোগ ‘সিফার’ আগামী পাঁচ মাসব্যাপী এই প্রকল্পটি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করছে। এটি অভিবাসীদের জেনে-বুঝে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন করে।

এই প্রচারণার লক্ষ্য হলো ইউরোপফেরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের মনো-সামাজিক সহায়তা (সাইকোসোশ্যাল সাপোর্ট) এবং সমাজে তাদের সফল পুনঃএকত্রীকরণে জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করা। এরই অংশ হিসেবে ২০০ জন বিদেশফেরত অভিবাসী মাইগ্র্যান্ট প্রোজেক্টের অভিজ্ঞ ও পেশাদার কাউন্সেলিং দল থেকে বিনামূল্যে ও গোপনীয় কাউন্সেলিং সেবা পাবেন। অনলাইনে একটি ফর্ম পূরণ (ফর্মের লিংক: https://malto-crm.org/bn/forms/181) করে অথবা সরাসরি কাউন্সেলরদের ফোন করে (+৮৮০ ১৫৩৭-৩১৫৭৭০, +৮৮০ ১৯৬৯-৮৩৫৫০৫) অভিবাসীরা এই কাউন্সেলিং সেবা পেতে পারেন।

বিদেশফেরতরা যে ধরনের সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হয় সেগুলো আরও ভালোভাবে বোঝা এবং দেশে ফেরার পরে সামাজিকভাবে যেসব অপবাদের মুখোমুখি হয় তা কমাতে প্রচারণাটি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করবে। 

‘সিফার’র গবেষণা বলছে, ইউরোপ থেকে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসীরা প্রায়ই নানা ধরনের অপবাদ বা কলঙ্কের মুখোমুখি হন। প্রায় অর্ধেক অভিবাসী নানা ধরনের অপবাদ বা কলঙ্কের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ও এলাকার মানুষের কাছ থেকে বেশ খারাপ আচরণের সম্মুখীন হয়ে থাকে।

প্রতিষ্ঠানটির ২০২১ সালের একটি গবেষণা আরও বলছে, ইউরোপে যাওয়ার জন্য পরিবার থেকে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করা হয়, তাই অভিবাসীরা যখন খালি হাতে ফিরে আসে তখন বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হয় না। এর মধ্যে, অনেককেই বিদেশে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, শোষণ, কঠিন কাজ ও নানান বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সব মিলিয়ে একজন অভিবাসী অত্যন্ত মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও হতাশায় ভুগতে থাকেন।

যেসব দেশ থেকে অভিবাসীরা অনিয়মিতভাবে সবচেয়ে বেশি ইউরোপে যায়, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। ২০২১ সালে প্রায় নয় হাজার বাংলাদেশি অনিয়মিতভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছে, বলছে ‘সিফার’র গবেষণা। এছাড়াও কোভিডের কারণে অসংখ্য অভিবাসীকে ইউরোপ থেকে জোরপূর্বক দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন’র (আইওএম) একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ৯৬% বিদেশফেরত বাংলাদেশি অভিবাসী চাকরির সুযোগের অভাব, অপর্যাপ্ত আয় ও আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন।

সংগঠনটি শুরুতে ইউরোপফেরতদের নিয়ে কাজ করলেও আগামীতে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করবে বলে জানান।


এইচআর/এমএ