ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে টিজিং ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের লেখাপড়া করেন। ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী জিম নাজমুল। তিনি মাস্টারদা সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম জামান খানের অনুসারী।

জানা যায়, মধ্যরাতে ওই তরুণী তার দুজন বন্ধুকে নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছবি তুলছিলেন। এ সময় নাজমুল এসে তাকে বহিরাগত বলে তার সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে নাজমুল তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরে ওই নারী শিক্ষার্থী নাজমুলকে থাপ্পড় মারেন। এরপরই নাজমুল ওই তরুণীকে মারধর করা শুরু করেন।

ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তরুণীকে মারধর করার দৃশ্য দেখে তারা ঘটনাস্থলে এগিয়ে যান। পরে ওই তরুণী তাদের কাছে বলেন যে, জিম তার সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেছেন। এরপর ওই তরুণী জিমকে প্রথমে একটি থাপ্পড় মারেন। ক্ষিপ্ত হয়ে জিমও তরুণীকে পরপর তিনটি থাপ্পড় মারেন। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী বলেন, জন্মদিন উদযাপন শেষে বন্ধুদের নিয়ে আমি ক্যাম্পাসে ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলাম। এমন সময় দুইজন ছেলে বাইক থামিয়ে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। আমার সঙ্গে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে। তারা আমাকে টিজ করে এবং এর প্রতিবাদ করলে থাপ্পড় মারে। 

তিনি আরও বলেন, আমি এ ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রক্টর স্যার এটি খুবই দুঃখজনক বলেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আমি এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় জিডি করব।

এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাজমুল (জিম) বলেন, ওই মেয়ে ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন রাজু ভাস্কর্যের সামনে ঘুমন্ত পথশিশুদের ছবি তুলছিল। সেখানে অনেক মেয়ে ছিল- যাদের কাপড় ঠিকঠাক ছিল না। আমি তাদের বলি, আপনি কি দায়িত্ব নিয়ে ছবি তুলছেন। তারা আমার পরিচয় জানতে চাইলে আমি ক্যাম্পাসের পরিচয় দিই। এ সময় ওই মেয়েটি আমার বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করে। এ বিষয়ে আমি ক্ষিপ্ত হলে সে আমার গায়ে হাত তোলে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী অফিসে এসেছিল। ঘটনার বিস্তারিত বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা থাকলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এইচআর/এনএফ