ক্যাম্পাসে নেই সভাপতি-সেক্রেটারি, হচ্ছে না সম্মেলন
এক বছর মেয়াদি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির কার্যক্রম চলছে পাঁচ বছর সাত মাস ধরে। ইউনিটটির মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটি নিয়ে বিভিন্ন সময়ই হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
গত ২৫ অক্টোবর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ৮ নভেম্বর ইউনিটটির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। রাত পোহালেই আসছে সেই দিন।
বিজ্ঞাপন
সম্মেলনের দিন এসে গেলেও তবে ক্যাম্পাসে নেই কোনো ধরনের সম্মেলনের আভাস, হয়নি প্রস্তুতি কমিটিও। এমনকি ক্যাম্পাসে নেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও। ফলে কেন্দ্রের নির্দেশনা থাকলেও হচ্ছে না নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কাঙ্ক্ষিত সম্মেলন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু আছেন ঢাকায় আর সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সফরসঙ্গী হয়ে গেছেন যশোরে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরও তা না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি যা চায়, তাই হবে। নিজের কাজে তিনি ঢাকায় আছেন।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, আমি দাদার (লেখক ভট্টাচার্য্য) সঙ্গে যশোরে আছি। আমি একা কিছু পারব না। কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত দিলে সে অনুযায়ী কাজ হবে।
কবে ক্যাম্পাসে ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাল অথবা পরশু ফিরব।
সম্মেলন তারিখ অতিবাহিত হওয়ার আগে তারা কেউই ফিরছেন না ক্যাম্পাসে। বর্তমান কমিটির এমন দায়িত্বহীন আচরণে ক্ষুব্ধ পদপ্রত্যাশী নেতারা।
সভাপতি পদপ্রত্যাশী এবং বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মো. জোনায়েদ আনসারী বলেন, তারিখ ঘোষণার পর সম্মেলন নিয়ে আমরা বেশ উচ্ছ্বসিতই ছিলাম। কিন্তু সম্মেলন না হওয়ায় সবাই হতাশ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বারবার প্রস্তুতি কমিটি করতে বলা হলেও তারা কোনো কমিটিই করে দেননি বরং সম্মেলন বানচালের জন্য গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তাদের নির্দেশনা ছাড়া তো আমরা কিছু করতে পারিনা। ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতেই তাদের এই প্রয়াস।
সম্মেলন না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউনিটের কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পুতুল চন্দ্র রায় জানান, সভাপতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ সম্পাদকও অপারগতা প্রকাশ করে আরও সময় চেয়েছেন। কিন্তু সময় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না মেনে সম্মেলন না করা গঠনতন্ত্রের ব্যত্যয়। এই কমিটির বিষয়ে ৮ নভেম্বরের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দীর্ঘসময় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এবং ত্রিশালের বাসিন্দা শামস-ই নোমানের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা। নোমানের প্রভাবেই কেন্দ্র থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শামস-ই নোমানের মোবাইলে বারবার কল করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উবায়দুল হক/আরএইচ