প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নিরুত্তাপ ঢাকা কলেজ
ঢাকা কলেজের ১৮১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। প্রতিষ্ঠার ১৮২তম বছরে রাখলেও ইতিহাস-ঐতিহ্যের এই বিদ্যাপীঠে নেই কোনো আয়োজন। একেবারে কোনো ধরনের কর্মসূচিই পালন করেননি কলেজ প্রশাসন। অন্যান্য দিনগুলোর মতোই শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশের সবচেয়ে প্রাচীন বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কলেজে কোনো আয়োজন নেই। কলেজ প্রশাসনের এমন আচরণে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবাক হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন না করা চরম হতাশার। কলেজ প্রশাসনের উচিত ক্যাম্পাসে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ১৮১ বছরের পথ চলা উদযাপন করা।
বিজ্ঞাপন
মাহমুদুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আজ কলেজে এসে বোঝার কোনো উপায় নেই যে আজ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সবচেয়ে প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানের জন্মদিনে কলেজ প্রশাসনের চুপ থাকাটা নিদারুণ কষ্টের। এভাবে কর্তৃপক্ষের নীরব থাকায় আমার মনে হয় ঢাকা কলেজের সাবেক বর্তমান সব শিক্ষার্থীরাই খুব কষ্ট পেয়েছে।
জুয়েল রানা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ১৮২ তে পা রেখেছে ঢাকা কলেজ। অথচ আজ কলেজে বা বিভাগে প্রশাসনিকভাবে কোনো কর্মসূচি নেই। কলেজে বোঝার উপায়ই নেই যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এমন কেন হলো তা বুঝতে পারলাম না। আমরা প্রত্যাশা করি দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবেন। শুধু প্রাচীন প্রতিষ্ঠিত হিসেবে নয় বরং স্বাধিকার আন্দোলন থেকে অসংখ্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাকা কলেজ সবার সামনে থেকে অংশগ্রহণ করেছে। এই বিষয়গুলোও দেশের মানুষের সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইউসুফ জানান, ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তারিখ নিয়ে এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন তারা।
তিনি বলেন, এই কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী তারিখ নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। আমাদের সম্পাদক (শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক) বলেছেন- নভেম্বরের ২০ তারিখে আবার আমি শুনেছি ডিসেম্বরের ৫ তারিখ। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। আশা করি আগামী এক মাসের মধ্যে সঠিক তারিখ পেয়ে যাবো।
তবে ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস নিয়ে ১৮৬৬ সালে ঢাকায় কর্মরত ইংরেজ জয়েন্ট কালেক্টর আর্থার লয়েড ক্লে’র লেখা ‘প্রিন্সিপাল অব দ্য হিস্ট্রি অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকস অব দ্য ঢাক্কা ডিভিশন’ নামক এক প্রতিবেদনে ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করেন। অধ্যক্ষকে প্রতিবেদনের এই তথ্য জানালে তিনি বলেন, আমাকে এসব কেউ বলেননি। বিষয়টি এবার যেহেতু মিস হয়ে গেছে আগামী বছর ঘোড়ার গাড়ি এনে ঢাকঢোল পিটিয়ে পালন করবো।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে এদিকে নজর দিতে পারিনি। আর ১৮৪১ সালের অকাট্য দালিলিক প্রমাণও পাওয়া একেবারে কঠিন।
আরএইচটি/এমএ