এক নারীকে শ্লীলতাহানি, তার স্বামীকে মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগ নেতা তানজির আরাফাত তুষারকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা-পুলিশ।

গতকাল বুধবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তুষার বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী বলে পরিচিত।

এর আগে মঙ্গলবার শাহবাগ থানায় দুইজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন এক নারী। মামলায় তুষার ছাড়াও আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র রাহুল রায়সহ আরও ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে। রাহুল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সাবেক সদস্য। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ ছাত্রলীগের উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মামলার বাদী এবং তার স্বামী রমনার কালি মন্দির থেকে পূর্ব পাশের শিখা চিরন্তনের গেট দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বের হওয়ার পথে তাদের গতিরোধ করা হয়। এ সময় বাদীকে হেনস্তা করে আসামিরা। পরবর্তীতে মোটরসাইকেল থেকে বাদীর স্বামীকে নামিয়ে পাশে থাকা চেয়ার দিয়ে আঘাত করা হয় এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের স্বর্ণ হাতিয়ে নেওয়া হয়।

মামলার বাদী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোটরসাইকেল নিয়ে শিখা চিরন্তনের পাশে গেলে একজন আমাকে দেখে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে। এ সময় একজন গালি দিতে দিতে আমার দিকে তেড়ে আসে এবং বলতে থাকে যে, 'ওকে ধর'। তখন তাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে আরেক দল আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে আক্রমণ করে। আমাদের দুজনকে নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে। একপর্যায়ে, আমি শাহবাগ থানার দিকে যাই এবং তারা আমাকে ধাওয়া দেয়। এরপর থানা থেকে পুলিশ এসে আমার স্বামীর ফোন ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। তারা আমার স্বামীর গলায় থাকা ১.৫ ভরি ওজনে স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। যার মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে লজ্জিত। এমন একটা ঘটনার মুখোমুখি হবো ভাবিনি। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে জগন্নাথ হলের রাহুল ও জসিম উদ্দিন হলের তুষারকে চিহ্নিত করা হয়। এদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনের নামে মামলা করেছি। ইতিমধ্যে, তুষারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার মাধ্যমেই বাকিদের বের করা যাবে।

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ জানান, এ মামলায় একজনকে (তুষার) গ্রেপ্তার করে কোর্টে চালান করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী-বাহিনী বিষয়টি দেখছে। আমাদের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা করা হবে। অন্যায়ভাবে যেন কাউকে হয়রানি করা না হয় সে বিষয়টিও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী-বাহিনী বিবেচনায় রাখবে বলে আশা রাখি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি আইনের বিষয়। আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী বিষয়টি দেখছে। আশা করি অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হবে না।

এইচআর/এসকেডি