অঞ্জলি, আরাধনা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর উৎসবমুখর পরিবেশে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা কলেজে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিদ্যাদেবী সরস্বতীর বাণী অর্চনা। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) কলেজের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা পূজায় অংশগ্রহণ করেন।

সকালে ঢাকা কলেজের পশ্চিম ছাত্রাবাস সংলগ্ন অস্থায়ী মন্দিরে প্রতিমা স্থাপন ও দুপুরে বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে সরস্বতী পূজা উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

বাণী অর্চনায় পুরোহিত বলেন, মাতৃকা দেবী, জ্ঞান, সংগীত, শিল্পকলা, বাক্য, প্রজ্ঞা, জ্ঞানার্জন ও নদী দেবতা হিসেবে বৈদিক যুগ থেকে শুরু করে আধুনিক যুগ পর্যন্ত হিন্দুধর্মে একজন গুরুত্বপূর্ণ দেবীর স্থান অধিকার করে রয়েছেন দেবী সরস্বতী। সাধারণত দ্বিভুজা বা চতুর্ভুজা মূর্তিতে পূজিতা হন। দ্বিভুজা মূর্তিতে তার হাতে থাকে বীণা ও পুস্তক (বই) অথবা লেখনী কলম ও পুস্তক। আর চতুর্ভুজা মূর্তিতে থাকে পুস্তক, অক্ষমালা, সুধাকলস ও বীণা অথবা ব্যাখ্যা মুদ্রা, বীণা, সুধাকলস ও পুস্তক অথবা অক্ষমালা, দুটি শ্বেত পদ্ম ও পুস্তক, অথবা পাশ, অঙ্কুশ, বিদ্যা বা পুস্তক ও অক্ষমালা। হিন্দুধর্মে এই প্রত্যেকটি বস্তুরই প্রতীকী অর্থ রয়েছে।

এছাড়াও সরস্বতী তার ভক্তদের মধ্যে সারদা, ব্রাহ্মী, শতরূপা, বাকদেবী, বিরাজ, মহাশ্বেতা ইত্যাদি আরও অনেক নামে পরিচিত বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সব শ্রেণির দর্শনার্থীদের আনাগোনায় মুখরিত হতে দেখা গেছে পূজা মণ্ডপ। সবার মুখেই ছিল সুখ সমৃদ্ধির প্রার্থনা।

মণ্ডপে আসা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী উৎপল কুমার বিশ্বাস বলেন, একসঙ্গে সবাই মিলে পূজা উদযাপন করায় অনেক আনন্দ লাগছে। পরিবার পরিজনের সঙ্গে পূজার আনন্দ উপভোগ করতে পারলে হয়তো আরও বেশি ভালো লাগত। তারপরও আমরা যারা শিক্ষার্থীরা এখানে রয়েছি, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে একসঙ্গে পূজার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করছি।

এ বছর কলেজে অস্থায়ী মন্দির স্থাপনের মাধ্যমে পূজা উদযাপন কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন সতীনাথ হালদার সুস্ময়, অপু চন্দ্র চৌধুরী।

সাধারণত মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে এই দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আদিপুরাণ অনুযায়ী ব্রহ্মের মুখ থেকে এই দেবীর উত্থান। দেবীর সব সৌন্দর্য ও দীপ্তির উৎস মূলত ব্রহ্মা। পূজার জন্য সরস্বতীর মূর্তি শ্বেত বস্ত্র পরিধান করে থাকে, যা পবিত্রতার এক অনন্য নিদর্শন বহন করে।

আরএইচটি/এসএসএইচ/