ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবীন এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কারো কাছে কোনো তথ্য-প্রমাণাদি থাকলে তা লিখিত আকারে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার রাশিদুজ্জামান খান টুটুল স্বাক্ষরিত এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। 

এদিকে হল প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দিতে শনিবার দুপুরে বাবা ও মামার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। প্রক্টরিয়াল বডির নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর জয়শ্রী সেনের তত্ত্বাবধানে দুপুর ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নেওয়া হয়। সাক্ষ্য প্রদান শেষে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাসে বিকেল সাড়ে ৫টায় বাড়ি ফিরেছেন ওই ছাত্রী। 

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, আমি এখন নিরাপদে আছি। তদন্ত কমিটি সেদিনের ঘটনার বর্ণনা শুনেছে এবং ৪-৫ পেজের আমার স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ নিয়েছে। আজ আবার বাসায় ফিরে যাচ্ছি। পরবর্তীতে তদন্তের স্বার্থে ডাকলে আসবো। আমি দোষীদের সর্বোচ্চ বিচার চাই।

ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে সুষ্ঠু তদন্তের পর ন্যায়বিচার করা হবে। আমরা এখন বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত নিরাপদে আছি। আমি চাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। যেন এমন ঘটনা দেশে আর না ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, সারাদিন ভুক্তভোগীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানে যা যা করণীয় আমরা তাই করেছি। দুপুরে মেয়েটি তার পরিবারসহ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। সন্ধ্যার আগে বক্তব্য প্রদান শেষে তিনি ও তার পরিবার নিরাপদে বাড়ি ফিরে গেছে।  

প্রসঙ্গত, গত রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত এক ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ইবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা আক্তার অন্তরা ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। র‍্যাগিংয়ের সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা তাকে মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে রাখে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরদিন সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ওই ছাত্রী।

রাকিব হোসেন/আরএআর