দিনেও মশারি টানাতে হচ্ছে ঢাবির হলে
মার্চের শুরু থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রতিদিনই বাড়ছে মশার উপদ্রব। মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অবস্থা এত খারাপ যে দিনের বেলায়ও মশারি টানাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মশার যন্ত্রণায় ঠিকমতো ঘুমানো কিংবা পড়াশোনা কোনোটাই করতে পারছেন না তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, কবি জসিম উদ্দিন হল, বিজয় একাত্তর হল, বঙ্গবন্ধু হল, রোকেয়া হল, স্যার এ এফ রহমান হলসহ বেশিরভাগ হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্যাম্পাসের সব জায়গায় মশার উৎপাত বেড়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীরা জানান, মশার সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে সন্ধ্যার পর রুমের দরজাও খোলা যায় না। খোলার সঙ্গে সঙ্গে মশার ভনভন বেড়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
আবাসিক হলের ঝোপঝাড় পরিষ্কার না করা, ময়লা-আবর্জনা ঠিকমতো অপসারণ না করা, দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা হলগুলোতে মশার প্রজননে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন তারা।
সরেজমিনে কয়েকটি হলে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে দিনের বেলায়ও মশারি টানিয়ে পড়াশুনা করতে এবং শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। তারা জানান, দিনের বেলায়ও মশারি টানানো ছাড়া থাকা কষ্টকর। সারাক্ষণ কয়েল জ্বালানোও সম্ভব হয় না। হলে মাঝে মাঝে মশার স্প্রে করা হয়, ঘাসও ছেঁটে ফেলা হয়। তবে কিছু জায়গায় ময়লার স্তূপ থাকায় মশার উপদ্রব বাড়ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এর প্রতিকার চান শিক্ষার্থীরা।
সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহীন আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মশার জন্য সন্ধ্যার পর কয়েল ছাড়া পড়ার টেবিলে বসা যায় না। মশার কামড়ে পড়ালেখা, ঘুমানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রাতে দরজা খোলার অবস্থা থাকে না। হলের বিভিন্ন স্থানে ময়লার স্তূপের কারণে মশা বাড়ছে। কখন আমরা অসুস্থ হয়ে যাই সে ভয়ে আছি।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জাফর আলী বলেন, আমি হলের দোতলায় থাকি। শীত শেষ হওয়ার পর থেকে মশার উপদ্রব বাড়ছে। আমার বন্ধু-বান্ধব যারা নিচতলা ও এক্সটেনশনে থাকে তারা অনেক বেশি এই উপদ্রবের শিকার। অনেকে দিনেও মশারি ব্যবহার করে। রাতে তো কথাই নেই। হল প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখছি না।
রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী সুইটি আক্তার বলেন, বিকেলের পর থেকে হলের মাঠে বসা যায় না। বেলকনিতেও অনেক বেশি মশা। মশার কারণে রাতে সারাক্ষণ ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। মাঝে মাঝে স্প্রে করা হয়, তবে আরো বেশি বেশি স্প্রে করা দরকার।
এ বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট আব্দুর রউফ মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মশার উপদ্রব বাড়ার বিষয়টি আমি নিজেও টের পেয়েছি। কিছু জায়গায় দীর্ঘদিনের ময়লার স্তূপ রয়েছে। সেগুলো দ্রুত পরিষ্কার করার নির্দেশ দিয়েছি। এছাড়া মাঝে মাঝে স্প্রে করা হয় সেটি আরো বাড়াতে হবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আবদুল বাছির ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবাসিক হলগুলোতে সিটি করপোরেশন থেকে মশার ওষুধ দিয়ে যায়। হল পরিষ্কার রাখার নির্দেশনাও রয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে আমাদের আরো বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি বিষয়গুলোর খোঁজ নিচ্ছি।
এইচআর/জেডএস