স্থানীয়দের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এবার সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী। রোববার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তারা অনশন শুরু করেন।

অনশনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, সোহাইব খান, ফয়সাল আহমেদ, দর্শন বিভাগের শাহাদাৎ হোসেন, রাবেয়া মুহিব, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের রিমি আক্তার, রাবিয়া জান্নাত রাইসা এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাত হাওলাদার। অন্য দুজন তাদের পরিচয় জানাতে চাননি। 

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- অনতিবিলম্বে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হককে অপসারণ করতে হবে, সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও আইডি কার্ড ব্যাতীত ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষেধ করতে হবে, হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও প্রশাসন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে, শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে, আহতদের সকল প্রকার চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপকারী বিজিবি/পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশন পুনরায় চালু করতে হবে।

এ বিষয়ে অনশনরত হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রাবিয়া জান্নাত রাইসা বলেন, 'আমাদের দাবি নিরাপদ ক্যাম্পাস। গতকাল যে ঘটনাটা ঘটছে সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ প্রথমে প্রশাসন নেয়নি। আমরা এর বিচার চাই। আমাদের যে দাবিগুলো আছে সেগুলো অবিলম্বে প্রশাসনকে মেনে নিতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে। 

অনশনরত দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া মুহিব বলেন, আমরা সাতটি দাবি নিয়ে এখানে অবস্থান নিয়েছি। আমরা প্রশাসনের মুখের কথায় আশ্বস্ত হতে চাই না। আমরা দাবির বাস্তবায়ন চাই। আমাদের দাবিসমূহ মেনে নেওয়া না হলে আমরা অনশন চালিয়ে যাব। 

গতকাল শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় বাসের ভেতর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির জের ধরে সহপাঠীরা বিনোদপুর বাজারে চালক ও হেলপারকে মারধর করেন। বাস থেকে চালককে নামিয়ে মারধর করা হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এতে বাধা দিলে তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিরোধ দেখা দেয়। এরপর রাতভর দফায় দফায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

জুবায়ের জিসান/আরএআর