দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ উভয় পাশে ছয় কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। 

সোমবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। রাত ১০টার দিকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের আশ্বাসে তারা ক্যাম্পাসে ফেরেন। 

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসের দুই ছাত্র সোমবার বিকেলে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজারে বাইকে তেল আনতে গেলে স্থানীয়দের দ্বারা হামলার শিকার হন। আমরা হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই। 

এ সময় আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, হামলাকারী গেলি কৈ’, ‘আমার ক্যাম্পাস আমার থাক, বহিরাগত নিপাত যাক’,‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। তারা তিন দফা দাবি জানান। 

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ইবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীর যথাযথ বিচার, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও বহিরাগত মুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে। 

হামলার শিকার দুই ছাত্র হলেন- ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ হাসান জিসাদ ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুপ্ত হাসান। ঘটনার পর দুই ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদের কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী সুপ্ত বলেন, দুপুরে আমরা বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের মফিজ লেকে ছিলাম। সেখানে বহিরাগত স্থানীয় দুই যুবক এসে বান্ধবীদের ভিডিও ধারণ করে। তাদেরকে ভিডিও ডিলিট করতে বল্লে আমাদের ওপর তেড়ে আসে। এ সময় তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হলে তারা আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে বিকেলে আমরা শেখপাড়ায় বাইকে তেল নিতে গেলে স্থানীয় আকাশসহ ৪/৫জন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন।

ইবি মেডিকেল সেন্টারের অফিস সহায়ক খন্দকার নাইমুল রেজা জানান, সন্ধ্যায় আহত অবস্থায় দুজনকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। একজনের হাতের কব্জি ছুলে গেছে ও আরেকজনের মাথায় দুই স্থানে ফুলে গেছে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারা বলছিলেন মাথা ঘোরাচ্ছে বা অস্বস্তি লাগছে। পরে তাদেরকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে আন্দোলন চলাকালে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদসহ প্রক্টরিয়াল বডির অন্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে প্রক্টর পুলিশের প্রটোকলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আন নূর যায়েদ বলেন, আমরা বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে এসেছি। শেখপাড়াসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাত ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) ফরহাদ হোসেন ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। 

রাকিব/আরএআর