আবাসিক হলে বহিরাগত শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন- এমন সংবাদের ভিত্তিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে তল্লাশি চালিয়েছে হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল টিম।

সোমবার (২০ মার্চ) দিনগত রাত ১২টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ও হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুনের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। এছাড়া হলের আবাসিক শিক্ষক, সহকারী প্রক্টর এবং প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এক ঘণ্টার বেশি অভিযানকালে হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে সাতজন বহিরাগতকে আটক করে একটি রুমে তালা দেওয়া হয়। জানা যায়, ঢাবির কক্ষগুলোতে অনেক বহিরাগত অবস্থান করছিলেন। অভিযানের খবর পেয়ে আগ থেকেই সেখান থেকে পালিয়ে যান তারা।

আটকরা হলেন- মো. ইব্রাহিম, মো. মুজাহিদ, মিজবাহুল হাসান, তানভীর হাসান, আবু সাঈদ, শাহরিয়ার বিন সিফাত ও মাজহারুল ইসলাম। তাদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রত্যাশী শিক্ষার্থী ও হলের শিক্ষার্থীদের আত্মীয়।

জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের হল থেকে বের হয়ে যেতে নির্দিষ্ট সময় বেধে দেয় হল প্রশাসন। এরপর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোনো বহিরাগতকে হলে অবস্থান করতে দেখা গেলে সরাসরি পুলিশে সোপর্দ করা হবে বলে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, হলে বহিরাগতরা থাকেন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এমন চিঠির ভিত্তিতে প্রক্টরিয়াল টিমকে সাথে নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। যাদের পাওয়া গেছে তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে হল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। 

তিনি বলেন, বহিরাগতদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা। এরপর কাউকে পাওয়া গেলে পুলিশে হস্তান্তর করা হবে। যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে তাদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে বের হয়ে যেতে হবে। সেখানে বৈধ শিক্ষার্থীদের সিট দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বহিরাগতরা হলে অবস্থান করেন এমন খবর পেয়ে হল প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে আমরা এখানে এসেছি। কয়েকজনকে আমরা ধরতে পেরেছি। তাদের বিষয়ে হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। বর্তমান শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনকে সহযোগিতা করলে হলকে বহিরাগত ও অছাত্রমুক্ত করতে সহজ হবে। তখন বৈধ শিক্ষার্থীদের বারান্দায় কিংবা গণরুমে থাকতে হবে না।

উল্লেখ্য, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভৌত অবকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ায় এবং বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম। তিন বছর বন্ধ থাকার পরও হলের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের অনেক শিক্ষার্থী সিট না পেয়ে বারান্দা ও গণরুমে অবস্থান করছেন।

দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগত ও অছাত্রদের উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে আসছেন বৈধ এ শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে এ অভিযান চালানো হয় এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সিট দেওয়া হবে বলে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়।

এইচআর/এফকে