প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তির প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ডাকা প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগকে ৫টি বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

সোমবার (২২ মে) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে এক এক করে ৫টি বাস নিয়ে যেতে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

দলীয় কাজে বাস দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক বলেন, উপাচার্যের নির্দেশেই তাদেরকে বাস দেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, গত ১৯ মে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেন। এর প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের অংশ হিসেবে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে যোগ দিতে রাবি ছাত্রলীগ বাসের জন্য উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্যের নির্দেশনায় পরিবহন প্রশাসক ৫টি বাস দেয়। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত বাস দলীয় কাজে ব্যবহার হবে এটা ভালো বিষয় নয়। দলীয় কাজে কখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহার করতে দেওয়া ঠিক না। সেটা যেকোনো দলই হোক না কেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে আরও বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন কাজে বাস দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের কোনো আত্মীয় মারা গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাস দেওয়া হয় না। তাহলে দলীয় কাজে কেন বাস দেওয়া হলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি নিন্দনীয় কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা অযোক্তিক এবং অন্যায়। এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পদ নয়, এটি শিক্ষার্থীদের সম্পদ। শুধু তারাই এটির ব্যবহার করতে পারবেন। এগুলো রাষ্ট্রের এবং জনগণের টাকায় চলে তাই রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়।

এ বিষয় জানতে চাইলে পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক মোকছিদুল হক বলেন, আমি জানি না তারা দলীয় কাজে ব্যবহার করবে কিনা। উপাচার্য স্যারের নির্দেশনায় তাদের বাসগুলো দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, পরিবহন দপ্তরটা আমার তত্ত্বাবধানে থাকে না। ছাত্রলীগকে যে বাস দেওয়া হয়েছে এটাই তো আমি জানি না। এবিষয়ে পরিবহন দপ্তর বা যারা পারমিশন দিয়েছে তারা ভালো বলতে পারবে।

মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে আপনি ভাইস-চ্যান্সেলরকে কেন ফোন করেছেন? এভাবে আপনারা ফোন করে ভাইস-চ্যান্সেলরকে যে প্রশ্ন করেন তা আমার জন্য বিব্রতকর। এগুলো সাংবাদিকতার সঙ্গে যায় না। আর ভাইস-চ্যান্সেলর কখনো কাউকে টেলিফোনে ইন্টারভিউ দেয় না।

জুবায়ের জিসান/আরকে