ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমেমোরেশন অব ১২ জুন ১৮৯৭ গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়াক: টুওয়ার্ডস প্রিপারেডনেস অ্যান্ড আওয়ারনেস ফর আর্থকোয়াক রিস্ক মিটিগেশন’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের উদ্যোগে শনিবার (১০ জুন) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সেমিনারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, এমপি প্রধান অতিথি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। এছাড়া, অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান এবং একশন এইড বাংলাদেশ-এর কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার এ এম নাসির উদ্দিন পৃথকভাবে ৩টি গবেষণাকর্ম উপস্থাপন করেন।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাকিব আহসান, জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশের সাবেক মহাপরিচালক ড. এ কে এম খোরশেদ আলম ও ড. রেশাদ মো. একরাম আলী।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ভূমিকম্প মোকাবেলায় সচেতনতাই মুখ্য বিষয়। প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। 

ভূমিকম্পের বিপদাপন্নতা কমানোর জন্য তিনি স্থানীয় পর্যায়ে ঘন ঘন মহড়া পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। 

ভূমিকম্প মোকাবিলা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরসণে শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং উদ্ধার কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত সংস্থাসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনসহ সংশ্লিষ্টদেরকে ইতোমধ্যে উদ্ধার ও অনুসন্ধানের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। সরকার ভূমিকম্প ঝুঁকিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ১৮৯৭ সালে সংঘটিত ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকুয়েক’ এর কথা স্মরণ করে বর্তমান বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরেন। 

১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের তথ্য প্রমাণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ভূমিকম্প পুনঃসংঘটিত হতে প্রায় ৩৫০-৬৫০ বছর সময়কাল প্রয়োজন। তবে একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় যেকোনো সময়ে ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প হতে পারে। দেশে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার মতো প্রায় ১৩টি ভূতাত্ত্বিক ফাটলরেখা রয়েছে, যেগুলো ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয়। 

ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরসণে প্রস্তুতি ও জনসচেতনতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা স্কুল পর্যায় থেকে কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বাড়ায়’ শীর্ষক এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিশিষ্ট গবেষকবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি এবং উন্নয়ন সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ এই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

এইচআর/এমএ