জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আল বেরুনী হল থেকে ইমরান আহমেদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী ইমরান আহমেদ জাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দর্শন বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। 

অভিযুক্তরা হলেন- জাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম, আসিফ মাহাদি আবির, খাইরুল ইনাম নাহিদ, নওশাদ আলম সুজন, স্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রকি, কর্মসংস্থান সম্পাদক সোহেল রানা, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল করিম, সহ-সম্পাদক মানিকুজ্জান খান, সহ-সম্পাদক রাজিবুল হক পান্থ, ছাত্রলীগ কর্মী ফয়জুল কবির সজীব, তুষার ও কাব্য।

জাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনামের নির্দেশে ইমরান আহমেদকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন অভিযুক্ত একাধিক ছাত্রলীগ নেতা।

ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা ইমরান আহমেদ বলেন, মার্চ মাসে এনামের নেতৃত্বে একটা বিদ্রোহী গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস অবরোধ করে। আমি সেখানে তাদের গ্রুপে যোগ না দেওয়ায় আমাকে বেশ কিছুদিন ধরেই তারা ব্লক ছেড়ে দিতে বলছিল। আসিফ আবির, খায়রুল এনাম নাহিদ আমাকে রুম ছাড়তে বলে এবং না ছাড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে না বলে হুমকি দেয়। তারপর নওশাদ, রকি, রেজা সন্ধ্যা ৭টায় আমাকে একই কথা বলে চলে যায়। তারপর রাত ১টার দিকে এসে বলে আমি স্বেচ্ছায় রুম না ছাড়লে তারা আমাকে রুম ছাড়তে বাধ্য করবে। তারপর রাত প্রায় ৩টার দিকে আমার রুমে এসে দরজায় আঘাত করে। তখন আমি কখন রুম ছাড়বো সেটা জানতে চায়। আমি সময় চাইলে তারা পাঁচ মিনিটের সময় দিয়ে বলে এই রুম আমাদের। তোমার কারণে আমাদের প্রাইভেসি নষ্ট হচ্ছে। তুমি এখানে থাকতে পারবে না। এ সময় তারা আমার জিনিসপত্র বের করতে জুনিয়রদের আদেশ দেয়। আমি বাধা দিলে আমাকেও টেনে হিঁচড়ে বেডসহ বের করে দেয়। আমি নিজে বলেছি আমি হলে থাকলে পলিটিকাল ব্লকেই থাকব। আমি নিজের ও আমার অনুসারীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় ভুগছি।

তবে ইমরানকে হল থেকে বের করে দেওয়ার সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন জাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম। তিনি বলেন, কিছু দিন ধরেই তার সঙ্গে আমাদের মতপার্থক্য চলছে। ব্লকের সবাই একদিকে, সে একদিকে। জুনিয়ররাও তাকে চায় না। জুনিয়রা মিলে তাকে বলেছে নেমে যাওয়ার জন্য। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ক্যাম্পাসে যারাই রাজনীতি করে, সবাই ছাত্রলীগের আদর্শের রাজনীতি করে। এখানে ব্যক্তিগত প্রভাব বা ব্যক্তিগত আদর্শ বলে কিছু নেই। ব্যক্তির রাজনীতি না করলে সে হলে থাকতে পারবে না- এমনটা তো হতে পারে না। আমরা বিষয়টা দেখছি। কেউ সংগঠনবিরোধী কাজে যুক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে এখনো অবগত নয়। এ বিষয়ে আমাকে কেউ এখনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। 

 আলকামা/আরএআর