জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিঠুন বাড়ৈ-কে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংগঠনের গঠনতন্ত্র না মেনে রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে এটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মিঠুন বাড়ৈ।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অব্যাহতির বিষয়টি জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থি, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে মিঠুন বাড়ৈকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ বরাবর সুপারিশ করা হলো।

এদিকে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে ১৭ (ক,খ,গ) ধারায় বলা আছে, ছাত্রলীগের কোনো শাখা কমিটিরই এর সদস্য বিশেষকে প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে পরামর্শ অধিক ক্ষমতা নেই। বহিষ্কারের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তবে ছাত্রলীগের যেকোনো শাখা উপযুক্ত কারণ দর্শিয়ে কোনো অভিযুক্ত সদস্যের সদস্যপদ ৩ মাসের জন্য স্থগিত করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ অভিযুক্ত সদস্যদের বিষয়ে নিজস্ব তদন্ত পরিচালনা করে প্রয়োজনে আরও কঠোর শাস্তি অথবা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করবেন।

এ বিষয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসাইন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে মিঠুন বাড়ৈ ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে নানা রকমের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ক্যাম্পাসের আশপাশে ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও তার অসৌজন্যমূলক আচরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। এছাড়াও ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের সঙ্গেও সে বিভিন্ন সময়ে খারাপ ব্যবহার করেছেন। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অভিহিত করেই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আরও অনেকের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ১৭ নম্বর ধারা মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অব্যাহতি পাওয়া জবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিঠুন বাড়ৈ। তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র অনুসারে আমাকে অব্যাহতি দেওয়ার এখতিয়ার শাখা ছাত্রলীগের নেই। কিন্তু আমাকে কোনো কারণ দর্শানো (শোকজ) ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ তা না জানিয়ে ও ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক পূর্ব শত্রুতা থেকে এটা করছে। তারা মূলত আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী না করতে ডেডিকেটেড কর্মীদের ছাঁটাই মিশনে নেমেছে। অথচ ছাত্র অধিকার পরিষদ, শিবির ও বিবাহিত কর্মীরা ছাত্রলীগের গ্রুপ চালাচ্ছে। এছাড়া তারা সংখ্যালঘু কর্মীদের ওপর নিপীড়ন করছে। জবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের স্বার্থে কয়েকজন বাদে ৩৫ জনের অধিকাংশ পোস্টেড নেতাদের ক্যাম্পাস রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। এজন্য জবির মিছিলে ছাত্রলীগের কর্মী কম থাকে।

এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি।

এমএল/এমএ