অবৈধ দখলদার ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে সংহতি সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, বোমা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, ভেনেজুয়েলা, রাশিয়া, চীন যেভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সেভাবে বলতে পারে না।

বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত এক সমাবেশে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন তারা। এ সময় তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বাহিনী হামাসের চলমান অভিযানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বছরের পর বছর নানাভাবে ইসরায়েলের কাছে নির্যাতিত হচ্ছে ফিলিস্তিনের জনগণ। তাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের ওপর সব নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হোক।

সমাবেশে অংশ নিয়ে আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, ইসরায়েলেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাতে এসেছি এখানে। তাদের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে পশ্চিমা দেশগুলো নীরব রয়েছে। সব মুসলিম দেশের উচিত এ সময় ফিলিস্তিনদের পাশে দাঁড়ানো। আমরা বিশ্বাস করি ফিলিস্তিন স্বাধীনতা নিয়েই ফিরবে ইনশাআল্লাহ। 

সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, পৃথিবীবাসীকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে তারা ফিলিস্তিনের ওপর এই অত্যাচারের কোনো প্রতিবাদ করে না। শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। ইসরায়েল প্রতি মুহূর্তে ফিলিস্তিনে আক্রমণ করছে। ফিলিস্তিনের এমন কোনো ঘর নেই যেখানে শহীদ নেই। আজকে ফিলিস্তিন সারা বিশ্বের খোলা কারাগার হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে পুরো মানবতাবিরোধী কাজ করছে ইসরায়েল।

তিনি আরও বলেন,  আজকে ভেনেজুয়েলা, রাশিয়া, চীন যেভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সেভাবে বলতে পারে না। মুসলিম বিশ্বের সব অস্ত্র ফিলিস্তিনে পাঠানো হোক, সেই অস্ত্র দিয়েই ইনশাআল্লাহ ফিলিস্তিন মুক্ত হবে। আজকের এই সংহতি সমাবেশের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশসহ সকল মুসলিম সাম্রাজ্যকে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর এবং তাদের সাহায্য করার দাবি জানাচ্ছি।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, নৈতিকতা ধরে রাখার পাশাপাশি মানবিকতার প্রশ্নে কোনো ছাড় নেই। আমাদের মধ্যে ঐক্য এবং শক্তি থাকলে ইসরায়েল নামক অবৈধ রাষ্ট্রটি একবারও হামলা করার সাহস করতো না। ফিলিস্তিনিদের প্রতি যে নিপীড়ন চালানো হয়েছে ও হচ্ছে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনিরা বাধ্য হয়ে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। আমরা তাদের সমর্থন জানাচ্ছি। পাশাপাশি বিশ্ব মুসলিম এক হয়ে তাদের পাশে দাঁড়াবে এই আহ্বান রাখছি।

বক্তব্য শেষে সমাবেশস্থল থেকে একটি প্রতিবাদী র‍্যালি বের করেন তারা। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় বিভিন্ন স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংগঠনের প্রায় আট শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।  

জুবায়ের জিসান/ এনটি